মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এ বছর সর্বোচ্চ ২৪৩ মন্ডপে সারদীয়া দুর্গাপুঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশাসন থেকে প্রতিটি মন্ডপে কঠোর নিরাত্তার বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। ডাক, ঢোল, কাঁসর ঘন্টা এবং ওলু ওলু ধ্বনিতে মুখরিত এখন মন্ডপপাড়া। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মন্ডপে মন্ডপে নৃত্যানুষ্ঠান। প্রতিটি মন্ডপ দেখতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। মন্ডপে মন্ডপে যেন উৎসবের আমেজ বইছে। দর্শনার্থদের ভিড় ঠেলতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। আগামী ২৫ অক্টোম্বর মহাদশমীর মধ্য দিয়ে পুজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এ বছর পৌরসভা ও ১৪ ইইউনিয়নে ২৪৩ মন্ডপে পুঁজা হচ্ছে বলে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু বিকাশ গোষ্মামী জানিয়েছেন। পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করছেন খান আহমেদ শুভ এমপি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাকিলা বিনতে মতিন, এসিল্যান্ড সুচী রানী সাহা, নবাগত ওসি মো. রেজাউল করিম ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন। খান আহমেদ শুভ ¥েপি বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মির্জাপুর একটি শান্তিপ্রিয় এলাকা। দলমত নির্বিশেষ সকল মানুষ সনাতন ধর্মের লোজকনদের সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন।
আজ শনিববার (২১ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা তৈরী এবং প্রতিমায় রং তুলির আচরে দূর্গাকে নানা সাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দানবীর রনদা প্রসাদ সাহার ২০০শ বছরের ঐতিহ্য দৃষ্টি নন্দন পুজা মন্ডপ দেখতে মন্ত্রী-এমপি, বিদেশী কুটনৈতিকসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন কুমুদিনী কমপ্লেক্্র ও দানবীর রনদা প্রসাদ সাহার গ্রামের বাড়ি মির্জাপুরে পরিদর্শন করছেন। প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা। কুমুদিনী কমপ্লেক্্ের এবং আরপি সাহার গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর সাহাপাড়া মন্ডপ সাজ সজ্জা করা হয়েছে। কুমুদিনী পরিবারের কর্নধার রাজিব প্রসাদ সাহা জানিয়েছেন, দানবীর আরপি সাহার ঐহিত্যকে ধরে রাখতে তাদরে নানা আয়োজন করতে হচ্ছে। মন্ডপে প্রতি দিন সন্ধায় আয়োজন করা হচ্ছে ভারতেশ^রী হোমস, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল এন্ড কলেজ, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ছাত্রী এবং মির্জাপুর গ্রামের বিভিন্ন ক্লাবের শিল্পীদের অংশ গ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এসব অনুষ্ঠান।
এ ব্যাপারে উপজেলা উদযাপন পরিষদের মভাপতি বিকাশ গোষ্মামী ও সাধারন সম্পাদক বাবু প্রমথেস গোষ্মামী সংকর বলেন, উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সরকারী নির্দেশনায় প্রতিটি মন্ডপে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পুজা উদযাপন হচ্ছে। এ বছর বাংলাদেশের সব জেলা ও উপজেলার মধ্যে মির্জাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী ২৪৩ মন্ডপে দূর্গাপুঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশাসন থেকে প্রতিটি মন্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সুচী রানী সাহা, মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম এবং পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুল এলাকার প্রতিটি মন্ডপের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম বলেন, প্রতিটি মন্ডপে সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ন ভাবে পুজা উদযাপনের লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগন কাজ করে যাচ্ছেন। টাঙ্গাইল জেরা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের দিক নির্দেশনায় সকলের সহযোগিতায় সুন্দর ও শান্তিপুর্ন পরিবেশে শারদীয় দূর্গাপুজা শেষ হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, টাঙ্গাইল জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে মির্জাপুরে সর্বাধিক ২৪৩ মন্ডপে দুর্গা পুঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি পুঁজা মন্ডপে সুষ্ঠু ভাবে পুঁজা উদযাপনের জন্য প্রশাসন থেকে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে পুলিশ, আনসার মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল টিম সর্বদা টহলে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।