মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি ও ১৩৬, টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর সংসদীয় আসনের টানা চার বারের সাবেক মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মো. একাব্বর হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সাবেক এমপির পরিবার শোক সভা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। শোক সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, সাধারন সম্পাদক ও প্রয়াত এমপি একাব্বর হোসেনের পুত্র ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত এবং উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শামীম আল মামুনসহ উপজেলা আওয়ামীলীগও এর সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীগন উপস্থিত ছিলেন। তিনি মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘ দিনের সভাপতি ছিলেন।
জানা গেছে, একাব্বর হোসেন ১৯৫৬ সালের ১২ জুলাই মির্জাপুর উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম মৃত মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া এবং মাতার নাম রোজিনা বেগম। দুই ভাই ও ৬ বোনের তিনি চাতুর্থ সন্তান ছিলেন। তার স্ত্রী ঝরনা হোসনে, এক পুত্র ব্যারিষ্টার মো. তাহরীম হোসেন সীমান্ত ও দুই কন্যা বড় মেয়ে একতা ও ছোট মেয়ে ঈশিতা রয়েছেন। একাব্বর হোসেন ছিলেন অত্যান্ত মেধাবী ছাত্র। এসএসসি পাশ করার পর তিনি ঢাকা সরকারি তিতুমির কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শ সৈনিক। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তার অগ্রনী ভুমিকা। ১৯৭৩ সালে সরকারি তিতুমির কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। এইচএসসি পাশের পর তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মহসীন হলের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এবং ১৯৭৮ সালে একই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১১ নং সেক্টর যুদ্ধ করেন। তিনি মির্জাপুর উপজেলা বিআরডিরি চেয়ারম্যান, ১৯৯০ সালে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম মহান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মির্জাপুরে বিএনপির দুর্গ ভেঙ্গে আওয়ামীলীগের প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। একজন সাধা মনের মানুষ এবং তার বিপুল জনপ্রিয়তার কারনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোয়ন পেয়ে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। টানা চার বারের এমপি হওয়ায় তিনি মির্জাপুর উপজেলাকে উন্নয়নের এক রোল মডেল হিসেবে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, বিদ্যুৎ, গ্যাস, শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল স্থাপন করে দৃষ্টান্ত রেখেছেন। তার অক্লান্ত চেষ্টায় মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগি সংগঠন সুসংগঠিত। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর অসুস্থ্য জনিত কারনে রাজধানী ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে তিনি মারা যান।