মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
কারখানা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে পিস্তল দিয়ে প্রাণ নামেল হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ মিয়া থানায় জিডি করেছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার নয় নং বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই দেওহাটা-বহুরিয়া-গেরামারা রোডের মহেড়া পেপার মিলের মালিক মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগি ইমরান হোসেন নয় নং বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে যান কারখানা পরিচালনার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্সের জন্য। ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ মিয়া তাদের বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বৈধ ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের বৈধ অনুমোদন আছে কিনা। কাগজপত্র চাওয়ায় কারখানার মালিক মোশারফ হোসেন ও চেয়ারম্যানের মধ্যে এ নিয়ে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে কারখানার মালিক মোশারফ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে তার সঙ্গে থাকা পিস্তল চেয়ারম্যানের টেবিলে রেখে হত্যার হুমকি দেয় বলে চেয়ারম্যান জিডিতে উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এবং বিভিন্ন মেম্বারদের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার পর নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে চেয়ারম্যান আবু সাইদ মির্জাপুর থানায় জিডি করেছেন। জিডি নং-৯১৫, তাং-২৪/০৭/২০২২ ইং।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মহেড়া পেপার মিলের মালিক মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগিরা হুমকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ট্রেড লাইসেন্স দাবী করে। আমি পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসকের অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, মহেড়া পেপার মিলের বিষাক্ত দুষিত বজ্র নদী-নালা, খাল-বিল ও আশপাশের পুকুর এবং ডোবানালায় মিশে এলাকার পরিবেশ মারাত্বক ভাবে হুমকির মুখে পরেছে। দুষিত ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে এলাকায় নানা রোগ ছড়িয়ে পরেছে এবং লোকজনের বসবাস অযোগ্য হয়ে পরেছে। কারখানার মালিক মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছেন আমি তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করেছি। এটা মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মহেড়া পেপার মিলের মালিক মো. মোশারফ হোসেন এবং তাহেরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্তেও চেয়ারম্যানের চাহিদামত মোটা অংকের টাকা না দেওয়ায় কারখানার জন্য ট্রেড লাইসেন্স দেননি। সাবেক চেয়ারম্যানের নিকট থেকে আমরা বৈধ ভাবে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছিলাম। অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৈধ পিস্তল আমার সাথে ছিল কিন্ত চেয়ারম্যানকে প্রাণ নামের হুমকি দেওয়া হয়নি। তিনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তিনিও চাঁদাবাজির মামলা করবেন বলে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বহুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা অভিযোগ তুলে ধরছেন। অভিযোগ যাচাই বাছাই চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে।