মির্জাপুরে নগ্ন ভিডিও ভাইরাল, লোকলজ্জায় কলেজ ছাত্রীর আতœহত্যা

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
ধর্ষনের নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ায় লোকলজ্জায় সুইসাইড চিঠি লিখে কলেজ ছাত্রী তানিয়া আক্তার (১৯) আতœহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত বখাটে সুজন মিয়া (২৬) এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তানিয়ার লাশ এবং সুইসাইড চিঠি উদ্ধার করেছে। গতকাল বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের সিংজুরি গ্রামে কলেজ ছাত্রীর অমানবিক এ আতœহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, তানিয়ার পিতার নাম হারুন অর রশিদ। তানিয়া আক্তার মির্জাপুর উপজেলা সদরের পৌরসভার মির্জাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। বখাটে সুজনের পিতার নাম আব্দুর রশিদ মিয়া, গ্রামের বাড়ি একই ইউনিয়নের বুড়িহাটি গ্রামে। তানিয়ার অসহায় পিতা হারুন মিয়া অভিযোগ করেন, কলেজে আসা যাওয়ার পথে বখাটে সুজন তানিয়াকে বিরক্ত করে আসছিল। এক পর্যায়ে নানা কৌশলে গোপন আস্তায় নিয়ে তানিয়াকে ধর্ষন এবং ব্লাক মেইল করে ধর্ষনের নগ্ন ভিডিও গোপনে ধারন করে। তানিয়া লোক লজ্জায় বিষয়টি তার পরিবারকে প্রথমে জানায়নি।
এদিকে ধর্ষনের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ধারন করে বখাটে সুজন ফেইজবুকে ছড়িয়ে দিবে এই হুমকি, ভয় ও ব্লাক মেইল করে তানিয়ার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। সুজনকে টাকা না দিলেই নগ্ন ছবি ফেইজবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতো। তারপরও বখাটে সুজন থেকে থাকেনি। গত এক সপ্তাহ পুর্বে সুজন লোকাল সাফি নামে একটি ফেইজবুক আইডি থেকে তানিয়ার ধর্ষনের নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে এলাকায় নানা সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিও দেখে তানিয়া মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পরে। এক পর্যায়ে তানিয়া লোকলজ্জায় সুইসাইড চিটি লিখে গতাল বুধবার বিকেলে বাড়িতে ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তানিয়ার লাশ এবং চিঠি উদ্ধার করে।
আতœহত্যার আগে তানিয়া সুইসাইড চিঠিতে যা লিখে গেছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো—–আমারে তুমরা সবাই মাফ কইরা দিও, আমার জন্য তুমাগো অনেক মান-সম্মান নষ্ট হইছে, আমি চাই না তুমাগো আরো মান-সম্মান নষ্ট হোক। তোমরা জানো না ঐতি কি কি করছে আমার সাথে। আমারে জোর কইরা ব্লাকমেইল কইরা আমার সাথে ধর্ষন করছে। তারপর আমার ছবি তুইলা সেই ছবি দিয়া আমার ব্লাকমেইল করেছে। আমার কাছ থাইকা দেড় লাখ টাকার জিনিস নিছে–।
এদিকে তানিয়ার সহপাঠী, শিক্ষক এবং এলাকাবাসি অমানবিক এই ঘটনার জন্য বখাটে সুজনকে অবিলম্বে গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে তানিয়ার বাবা হারুন মিয়া ও তার ভাই আবু তালেব গনমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা অসহায় কার কাছে বিচার দিবু। তানিয়াকে হারিয়ে আমরা এখন মৃত্যুর মুখে। লোকলজ্জায় আমরাও এখন মরে যাবো। বখাটে সুজন ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন গনমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, কলেজ ছাত্রী তানিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি সুইসাইড চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত সাপেকে।ষ আইনগত ব্যবস্তা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here