মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল,
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার পাড়াগ্রাম-মানিকনগর জিসি সড়কে ৯৭৮০ মিটার চেইনেজে ১৩ মিটার আরসিসি নতুন গার্ডার ব্রিজ নির্মানের জন্য পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে না দেওয়ায় ঠিকাদারকে বিপুল অংকের টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক দিকে মালামালের দাম বৃদ্ধি, অপর দিকে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে না দেওয়ায় ঠিকাদার এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির কারনে এই অবস্থা বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রকৌশল অফিস সুত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে জিডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় সিংগাইর উপজেলার পাড়াগ্রাম-মানিকনগর জিসি সড়কে ৯৭৮০ মিটার চেইনেজে ১৩ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মানের কাজ পান মেসার্স তাপস ট্রেডার্স। চুক্তি অনুযায়ী দেড় বছরের মধ্যে ব্রিজ নির্মানের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের গাফিলতির কারনে ঠিকাদার এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উক্ত স্থানে একটি পুরাতন ব্রিজ রয়েছে। নতুন ব্রিজ নির্মান করতে হলে পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল সংশ্লিষ্ট এলাকার এলজিইডি বিভাগের। ব্রিজ নির্মান কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কাজ শুরু করার জন্য মালামাল নেওয়া, ড্রাইভারশন নির্মানও করেন। কিন্ত নতুন ব্রিজ নির্মানে বাঁধা হয়ে দাড়ায় পুরাতন ব্রিজ। পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রকৌশল বিভাগকে লিখিত আকারে চিঠি দেওয়া হলেও বিভিন্ন অযুহাতে ব্রিজটি ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে না।
এ দিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে লে-আউট না দেওয়া এবং মালামালের উর্ধ্বগতির কারনে বিপুল অংকের টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পরেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ব্রিজ নির্মানকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাপস ট্রেডার্সের প্রতিনিধি বাবু উত্তম কুমার সেন লালুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাজ পাওয়ার পর আমরা নির্ধারিত সময়ে মালামাল প্রদান করি এবং লে-আউট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করি। কিন্ত কতৃপক্ষ পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে না দেওয়ার কারনে এবং লে-আউট প্রদান না করায় নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারিনি। বিষয়টি একাধিকবার কতৃপক্ষকে অবহিত করার পরও কোন কাজে আসছে না। কতৃপক্ষের অবহেলার কারনে এবং মালামালেল উর্ধ্বগতির কারনে আমাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিপুল অংকের টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিষয়টির দিকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রুবায়েত জামান বলেন, পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল উপজেলা পরিষদ থেকে। টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানি বৃদ্ধির কারনে ব্রিজটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করতে দেরী হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরাতন ব্রিজটি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে ভাঙ্গার কাজ শেষ হবে এবং ঠিকাদারকে নতুন ব্রিজ নির্মানের জন্য জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলার এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফায়জুল হক বলেন, পুরাতন ব্রিজ ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে ভাঙ্গার কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা করছেন। পুরাতন ব্রিজটির ভাঙ্গার কাজ শেষ হলেই নতুন ব্রিজটি নির্মানের জন্য ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।