মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
কলেজ ছাত্রী একমাত্র মেয়ে পূজা বণিকের মৃত্যুর খবর শুনে কীটনাশক (হেক্্রাসল) পান করে কলেজ ছাত্রীর মা বাসনা রানী বণিক (৫০) আত্নহত্যা করেছেন। মায়ের আত্নহত্যা ও মেয়ের মৃত্যুর পর পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম এলাকায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে। মা মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকা শোকে স্তব্দ হয়ে গেছে।
প্রতিবেশী অনিন্দ্র পাল জানান, কলেজ ছাত্রীর নাম পুজা বণিক (১৮)। তার পিতার নাম প্রাণ তোষ বণিক। কলেজ ছাত্রী পুজা বণিক ছিল ঐ পরিবারের একমাত্র সন্তান এবং মেধাবী ছাত্রী। দীর্ঘ দিন ধরে কিডনি জনিত রোগে অসুস্থ্য ছিল। পরিবারের অসচ্ছলতার কারনে ঠিকমত চিকিৎসা নিতে পারেনি। কন্যাকে বাঁচাতে অসহায় পরিবারটি জমিসহ বাড়ির ভিটেমাটি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।
পুজা বণিকের সহপাঠী কলেজ ছাত্রী মুনিয়া, শিলা, তানিয়া ও ইয়াসমিন কান্না জড়িত কন্ঠে জানায়, তারা ছিল খাদেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পুজা বণিক ছিল তাদের মধ্যে মেধাবী ছাত্রী। এসএসসি পাশের পর মির্জাপুর সরকারী কলেজে ভর্তি হয়েছিল। আগামী ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল পুজার। পরীক্ষার দেওয়ার পুর্বেই পুজা অকালে চলে যাওয়ায় তারাও ভেঙ্গে পরেছে। তারা এটা মেনে নিতে পারছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে পুজা বণিক মারা যায়। মেয়ের লাশ বাড়িতে আনার পর আজ শুক্রবার সকালে তার মা বাসনা রানী বণিক মেয়ের মৃত্যুর শোকে নিজেও কীটনাশক পান করে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার মারা যান। বিকেলে মা মেয়েকে একই স্মশানে দাহ্য করা হয়েছে।
মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, আইনী প্রক্রিয়া শেষে কলেজ কলেজ ছাত্রীর মায়ের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।