মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
আওয়ামীগের নেতা ও দুই ইউপি চেয়ারম্যানের ইটভাটাসহ ৯ ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। ভাটা মালিকদের অভিযোগ, একদিকে ব্যাংক ঋণ ও কয়লার দাম বৃদ্ধি, অপর দিকে হাইকোর্টে মামলা থাকার পরও বিভিন্ন অযুহাতে তাদের ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়ে সোয়া কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এতে আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন তারা। ঘটনার পর ভাটা মালিকদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ইটভাটা ভেঙ্গে মালিকদের জরিমানা করা হয়।
টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, ইটভাটার বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মির্জাপুর উপজেলার খাটিয়ারঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিউ এম বি এম ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক আজাগানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাদের সিকদারকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা, নিউ দেওয়ান ইটভাটা ভেঙ্গে ইটভাটার মালিক ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ানকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা, এইচ বি এম ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক দিদারুল আলমকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা, পলাশতলী এলাকায় জে এসবি ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক জয়নাল সিকদারকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, আবু তাহেরের ইট ভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক আবু তাহেরকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা, সানব্রিকস ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক সুলতান আহমেদ খানকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা, এইচ এ বি ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক সোনা মুদ্দিনকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, কে এ বি ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক মজিবুর রহমানকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা এবং এম আর বি ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটার মালিক মজিবর সিকদারকে ৫ লাখ টাকাসহ এক কোটি ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল জেলার পরিচালক জরিম উদ্দিন এবং সহকারী পরিচালক বিপ্লব কুমার পাল বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অবৈধ ইটভাটা ভেঙ্গে ভাটা মালিকদের জরিমানা করা হয়েছে। তাদরে এ অভিযান চলমান থাকবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুন্নেছা আক্তার বলেন, সরকারী নিয়ম না মেনে ইটভাটা গড়ে তোলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদরে সহযোগিতায় সরকারী নির্দেশনায় ইটভাটা ভেঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নেতা মো. মঞ্জুরুল কাদের বাবুল, হাজী মোক্তার আলী সিদ্দিকীসহ ক্ষতিগ্রস্থ্য ভাটা মালিকগন বলেন, সরকারী নিয়ম মেনেই তারা দীর্ঘ দিন ধরে পরিবেশ বান্ধব ইটভাটা স্থাপন করে ইট প্রস্তুত করে আসছেন। একটি ইট ভাটা থেকে সরকার প্রতি বছর ১০-১২ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়ে আসছে। নানা অযুহাতে অনেক ভাটা মালিকদের ছাড়পত্র না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যাংক ঋনে তারা জর্জরিত। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য ইটভাটা মালিকগন হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করেছেন। নানা অযুহাতে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইট ভাটা ভেঙ্গে বিপুল অংকের টাকা জরিমানা করায় মালিকরা চরম বিপাকে পরেছেন। বিষয়টির দিকে সু নজর দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, পরিবেশ ও জলবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।