মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
মসজিদ ও মাদ্রাসা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে মসজিদের ইমাম এবং মাদ্রসার প্রিন্সিপালের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর অবস্থায় মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি সাইফুল ইসলাম (৪০) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই গ্রুপের পক্ষ থেকে একে অপরকে দায়ী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তিন নং ফতেপুর ইউনিয়নের হাতকুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) মির্জাপুর থানা পুলিশ সুত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হাতকুড়া গ্রামের বাইতুল আমান জামে মসজিদ এবং নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং মসজিদের ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলামকে নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) মসজিদের ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম এবং প্রতিপক্ষ যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার ভাই আশরাফুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের হামলায় ইমাম সাইফুল ইসলামের চোখ, মাথা এবং শারীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র শ্রিফলতলী হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে মসজিদের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, মাদ্রাসার সাধারন সম্পাদক যুবদলের নেতা সোহেল ও আহত ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অভিযোগ রয়েছে। পুর্ব শত্রুতার জের ধরে আসাদ ও তার ভাই আশরাফুলসহ তাদের সহযোগিরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলার পর বিভিন্ন ভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আহত ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় আসাদ ও আশরাফুলসহ তাদের সহযোগিদের দায়ী করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা তদন্ত সাপেক্ষ দোষীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ মো. আসাদুজ্জামান আসাদ অভিযোগ করেন, মসজিদ কমিটির কতিপয় সদস্য ও ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকার উৎঘাতসহ ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত আনার নানা অভিযোগ রয়েছে। সরকারী বিরোধী সংগঠন সত্যের সন্ধানে নামে একটি সংগঠনের তিনি ফতেপুর ইউনিয়নে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিপুর্বে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পর পুলিশ তাকে আটক করে। মসজিদে তার বিরুপ মন্তব্যের কারনে সমাজের ৫০-৬০ জন মুসুল্লি মসজিদে নামাজ আদায় না করে অন্যত্র নামাজ আদায় করে আসছে। গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ইমামের লেকজনের হামলায় তার চাচা আলী আজগরসহ তিনিও আহত হন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বাদী হয়ে মসজিদের ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম, সাদ্দাম ও শাহানুরকে আসামী করে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপপরিদর্শক (এসআই) ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তিনি বলেন, মসজিদের জমি ও ইমামকে নিয়ে এলাকার দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তদন্তের কাজ চলছে। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এলাকায় শান্তির লক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।