মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন ৩রা গোড়ান-সাটিয়চড়ায় গ্রাম বাংলার ঢাকার বাইরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ৩ এপ্রিল গ্রাম বাংলার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ স্মৃতি সংসদ গোড়ান-সাটিয়াচড়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্বে পুষ্প স্তবক অর্পন ও শহীদদের স্মরণে ৫২ তম স্মৃতিচারনসহ আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু। উদ্ধোধক ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান।
৩ এপ্রিল গ্রাম বাংলার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ স্মৃতি সংসদের সভাপতি কমরেড গোলাম নওজব পাওয়ার চৌধূরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক, সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মোশারফ হোসেন মনি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির ও তৌফিকুর রহমান তালুকদার রাজিব প্রমুখ।
৩রা এপ্্িরল ১৯৭১ স্বাধীনতার গ্রাম বাংলার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ স্মৃতি সংসদের সভাপতি গোলাম সওজব পাওয়ার চৌধুরীসহ একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাগন জানান, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর মুক্তিপাগল জনতা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান খান ফরুক, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. একাব্বর হোসেন ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নের্তৃত্বে আপামর জনতা প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেন। স্থান হিসেবে বেছে নেন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার গোড়ান-সাটিয়াচড়া। ২রা এপ্রিল মুক্তিপাগল জনতা জানতে পারেন, পাকসেনারা এই রাস্তা দিয়ে গাড়িবহর নিয়ে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে আসছে। গোড়ান-সাটিয়াচড়া আসামাত্র চার দিক থেকে আক্রমন শুরু হয়। এই প্রতিরোধ যুদ্ধে ২৯ জন ইপিআরসহ সাটিয়াচড়াসহ আশপাশের গ্রামের ১৫১ জন নারী পুরুষ শহীদ হন। পাকসেনারা হেলিকপ্টারযোগে আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধা, ইপিআর ও নিরীহ নারী পুরুষকে হত্যা করে এবং জালিয়ে পুড়িয়ে দেয় শত-শত ঘরবাড়ি। শহীদদের মধ্যে সুবেদার আব্দুল আজিজ, হাবিলদার আব্দুল খালেক, হাবিলদার খলিলুর, আব্দুল গফুর, মকবুল হোসেন, করটিয়া সরকারী সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক জুমারত আলীসহ ২৯ জন ইপিআর ও ১৫১ জন শহীদ হন।