মির্জাপুরে স্মরণকালের বৃষ্টিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অথৈয় পানি, রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
স্মরণকালের একটানা ভারি বৃষ্টিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অথৈয় পানি জমে খেলাধূলা বন্ধ হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টি থাকায় এলাকার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন এলাকায় পাকা ও কাঁচা রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিতে ডুবে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে মানুষের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে টানা বৃষ্টি পাতের ফলে মানুষের দুর্ভোগের এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ্য লোকজন জানায়, গত বুধবার (৪ অক্টোবর) থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও সঙ্গে হালকা বাতাস শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে মুষল ধারে বৃষ্টি এবং সঙ্গে ঝড়ো বাতাস। বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের ফলে এলাকার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলসহ সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়। উপজেলার পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলে পানি ঢুকে কাঁচা ও আধাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগি লোকজন অভিযোগ করেছেন। আজ শুক্রবার ভোর রাতে গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া-লালবাড়ি রাস্তা ভেঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে ঐ এলাকার লোকজনের দুর্ভোগের শেষ নেই। একই ভাবে উপজেলার ধল্যা-বরাটী, শুভুর‌্যা-বরাটী, কুরনী-ফতেপুর, বরাটী-তেঘুড়ি, তালতলা-বালিয়াজান, পেকুয়া-অভিরামপুরসহ ১০-১২টি রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টিতে বালিয়াজান উচ্চ বিদ্যালয়, বাইমহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে পানি প্রবেশ করে পড়াশোনার মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, টানা বৃষ্টির ফলে ব্রিজ-কালভাট ও রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। এরাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ্য রাস্তার তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এমপি মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে ক্ষতগ্রস্থ্য রাস্তা দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হবে। উপজেলা কৃষি অপিসার সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, টানা ভারি বৃষ্টিতে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসল এবং সবজির ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তাগন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকদের তালিকা সংগ্রহ করছেন। নরকারের সহযোগিতায় তাদের প্রনোদনার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে উপজেলা সদরের বাইমহাটি মৌজায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মান করা হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিশ্রুতি প্রকল্প ঢাকা বিভাগীয় উন্নয়ন বোর্ডের অর্থে ১৯৭৯ সালে টাঙ্গাইলের তৎকালিন জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল ইসলাম। স্টেডিয়ামটি রাস্তা থেকে নিচু হওয়ায় বছরের অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। খেলাধুলার পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অথৈয় পানি জমেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে খেলাধুলা। শেখ রাসেল মিনি স্টেয়ামের পানি নিষ্কাশনের জন্য মাঠের পুর্ব পাশে পাইপ স্থাপন করা হলেও শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারী কলেজ কতৃপক্ষ জোর পুর্বক পাইপ বন্ধ করে দেওয়ায় মাঠের পানি নিষ্কাশন হতে পারছে পারছে না।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সাধারন সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটি ভরাট করে উচু করা অতি প্রয়োজন। পানি নিষ্কাশনের জন্য পাইপ স্তাপন থাকলেও শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরবারী কলেজ কতৃপক্ষ জোর পুর্বক পাইপ বন্ধ করে দেওয়া পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। ফলে একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা স্থানীয় রুপ নিয়েছে। তিনি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সভাপতি শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, টানা বৃষ্টিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের মাঠে জলাবদ্ধা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করে অর্থ বরাদ্ধ পেলে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here