মির্জাপুরে আলমোহনা হাসপাতাল এন্ড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল,
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে অপরারেশন করায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আলমোহনা ক্লিনিকে রাশেদা আক্তার মুক্তি (২৬) নামে এক প্রসুতির মৃত্যুর হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রসুতির মৃত্যুর পর নবজাতকের অবস্থাও আশংকা জনক বলে তার পরিবার জানিয়েছে। গতকাল রবিবার (১৭ মার্চ) রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কি এলাকায় সরকারী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্্র সংলগ্ন (১০ গজের মধ্যে) আলমোহনা হাসপাতাল এন্ড ক্লিনিকে প্রসুতির এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৮ মার্চ) প্রসুতির খালাতো ভাই আবির হোসেন জানায়, রাশেদা আক্তার মুক্তির স্বামীর নাম মো. সাইফুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার হিলড়া আদাবাড়ি গ্রামে। প্রসব ব্যথা নিয়ে গতকাল রবিবার রাশেদা আক্তারকে জামুর্কি আলমোহনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও এনেথসেথিয়া ছাড়াই ভুয়া চিকিৎসক, নার্স ও আয়া দিয়ে দুপুর একটার দিকে তাকে সিজার করা হয়। সিজারের পর রাশেদার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। রাশেদা আক্তারের পুত্র সন্তান হলেও পরে তার জ্ঞান ফিরে আসেনি। রাত আটটার দিকে সে মারা যায়। মায়ের মৃত্যুর পর নবজাতকের অবস্থাও আশংকা জনক বলে আবির অভিযোগ করেন। ঘটনার পর থেকেই ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সটকে পরেছে।
এ ব্যাপারে রাশেদা আক্তারের স্বামী সাইফুল ইসলাম ও তার বাবা হাকিম মিয়া অভিযোগ করেন, তাদের প্রতারনার ফাঁদে ফেলে ভাল চিকিৎসার নামে ক্লিনিকের ভুয়া চিকিৎসক, নার্স ও আয়া দিয়ে ভুল অপারেশন ও ভুল চিকিৎসায় রাশেদার মৃত্যু হয়েছে। আমরা ক্লিনিকের মালিককে অবিলম্বে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে আলমোহনা ক্লিনিকের মালিক জাহিদুল ইসলাম ও শামীম মিয়ার সঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা বার বার টেলিফোন কেটে দেন। প্রসুতির মৃত্যুর পর থেকেই হাসপাতালের মালিকপক্ষ গা ঢাাকা দিয়েছে। একটি চক্রের সঙ্গে যোগসাজস করে নিহত প্রসুতি রাশেদা আক্তার মুক্তির পরিবারের সঙ্গে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য যে, ইতিপুর্বেও এই ক্লিনিকে এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসি াভিযোগ করেছেন।
এ ঘটনা জানতে মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বরেন, আলমোহনা হাসপাতাল এন্ড ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে প্রসুতির মৃতুর অভিযোগ আসায় ঘটনার তদন্তের জন্য সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর মেডিকেল অফিসার ও কনসালটেন্ট বর্নালী দাসকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হচ্ছেন ডা. মোহাম্মদ আলী এবং সেনেটারী পরিদর্শক ইসরাত জাহান। প্রাথমিক তদন্তে তারা তারা প্রসুতির মৃত্যুর জন্য অব্যবস্থাপনা পেয়েছেন। প্রসুতির সিজারের সময় কোন রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক, এনেসথেসিস ও নার্স ছিল না। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে জেলা সিভিল সার্জনের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গৃহবধুর পরিবারকে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here