মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের আর মাত্র চার দিন বাকী। শেষ মুহর্তে এসে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পদে চলছে ত্রিমুখী হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই। চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে দুই জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে তিন জনসহ ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ঋৃণ খেলাপি এবং ধৈত নাগরিক হওয়ার অভিযোগে আওয়ামীলীগ নেতা ও হেভিওয়েড চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রেজাউল করিম বাবুলের মনোয়নপত্র বাতিল হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। আওয়ামীলীগের দুই হেভিওয়েড প্রার্থী থাকায় নির্বাচন এখন তুঙ্গে। ভোটারদের প্রশ্ন আসলে কে হচ্ছেন আগামীর উপজেলা চেয়ারম্যান। নির্বাচন স্বচ্ছ করতে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় ভোটারগন খুঁশি।
আজ শনিবার (১ জুন) মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্র জানায়, চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে ২ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে ৩ জনসহ ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রায়ত চার বারের এমপি এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেনের পুত্র ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত (আনারস) উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ পিরিচ) এবং ইট ভাটা মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বিএনপির সাবেক নেতা ফিরোজ হায়দার খান (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আজাহারুল ইসলাম আজাহার ( তালা চাবি) এবং মো. শওকত মিয়া (টিউবওয়েল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা (ফুটবল), জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চাঁদ সুলতানা (হাঁস) কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগর সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ চলচিত্র শিল্পী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ডি এ তায়েবের স্ত্রী মাহবুবা শাহরীন (কলসি) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ ভোটারগন বলেছেন, চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী এখন শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। দিন রাত তারা গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন। আওয়ামীলীগের বৃহৎ একটি অংশ অবস্থান নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ পিরিচ) পক্ষে। তারা দিন রাত বিভিন্ন এরাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। ভোট চাইচেন কাপ পিরিচ, উিবওয়েল এবং কলসির জন্য। অপর দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রায়ত চার বারের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেনের পুত্র ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত (আনারস) পক্ষে তরুণ ভোটার ও আওয়ামীলীগের তৃণমুলের নেতাকর্মীসহ কারিগর সম্প্রদায় এবং সনাতন ধর্মের লোকজন জোট বেঁধেছেন। প্রতিটি এলাকায় প্রয়াত চার বারের এমপি একাব্বর হোসেনের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে ভোট চাইছেন আনারস, তালাচাবি ও ফুটবলের জন্য। বিএনপির সাবেক নেতা ও ইট ভাটা মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বিএনপির সাবেক নেতা ফিরোজ হায়দার খান (মোটর সাইকেল) এর পক্ষে বিএনপির একটি অংশ এবং সাধারণ ভোটারদের একটি অংশ অবস্থান নেওয়ায় নির্বাচনের মোড় যে কোন সময় পাল্টে যেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে হেভিওয়েড তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হচ্ছে হাড্ডা-হাড্ডি।
ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে আজাহারুর ইসলাম আজাহার (তালাচাবি) শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তিনি স্বচ্ছ রাজনীতি করায় প্রতিটি এলাকায় তার ভোট ব্যাংক রয়েছে বলে ভোটারগন জানিয়েছেন। অপর দিকে মো. শওকত মিয়া (টিওবওয়েল) তিনি একেবারেই নতুন মুখ। তিনি ব্যবসায়ী হওয়ায় নানা ভাবে বেশ টাকার মালিক হয়েছেন। আওয়ামীলীগের বড় একটি অংশ তার পক্ষে কাজ করছেন। দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান সংরক্ষিত মহিলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা (ফুটবল) বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগর সহসভাপতি মাহবুবা শাহরীন (কলসি) এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চাঁদ সুলতানা (হাঁস)।
এ ব্যাপারে নির্বাচন অফিসার শরীফা বেগম বলেন, আগামী ৫ জুন মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপে মির্জাপুর উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৩ হাজার ১১৩ জন এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ জন। মোট কেন্দ্র ১৪৪, অস্থায়ী কেন্দ্র ৫৫ এবং মোট বুথ সংখ্যা ৯৭৪। প্রিজাইডিং অফিসার ১৫২ জন, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ৯৭৪ জন এবং পুলিং অফিসার ১৯৪৮ জনসহ মোট ৩০৭৪ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে রিটানিৃং অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী এবং মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শেখ নুরুল আলম বলেন, চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মির্জাপুর উপজেরায় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ন ভাবে গ্রহনের লক্ষে নির্বাচন কমিশন এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।