মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় এক গ্রুপের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোবারক হোসেন (২৪) ও অপর গ্রুপের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠু (৩৫) সহ ৫ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বুধবার (৫ জুন) উপজেলার ৮ নং ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ৬৬ নং ইচাইল হাফেজিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর উভয় গ্রুপের মধ্যে টচান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার ছিল ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে দুই জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে তিন জনসহ ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা কনের। ৮ নং ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ৬৬ নং ইচাইল হাফেজিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে ভোট গননার পর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত (আনারস) পান ৫১৮ ভোট, এ এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ-পিরিচ) পান ২২২ ভোট এবং ফিরোজ হায়দার খান (মোটর সাইকেল) পান ৩০ ভোট।
আহত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোবারক মোবারক হোসেন অভিযোগ করেন, আনারসের প্রার্থী ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত বেশী ভোট পেয়ে বিজয়ী হওয়ায় কাপ-পিরিচের কর্মী সমর্থরা ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠুর নেতৃত্বে রাসেল, জুয়েল, আসাদ ও সজিবসহ তাদের সহযোগিরা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পুর্ব পরিকল্পনা করে তারা তার উপর হামলা চালিয়েছে বলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোবারক হোসেন দাবী করেন। অপর দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভোট গননাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ মোবারক, মোশারফ, মাইন, রাব্বি ও ওমর হামলা চারিয়ে কাপ পিরিচের সমর্থক মিঠু, রাসেল, জুয়েল, আসাদ ও সজিবকে পিটিয়ে আহত করে। এদিকে আশপাশের লোকজন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় মোবারককে উদ্ধার করে রাতেই জামুর্কি সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিয় যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ভাবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠুকেও জামুর্কি সরকারী স্থাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নেওয়া হয়। তার অবস্থাও অবনতি হওয়ায় টাঙ্গাইল সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। মোবারকের মাথায় বেশী আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় অবস্থা সংকটাপন্ন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে আনারসের কর্মীরা জানিয়েছেন। অপর দিকে মিঠুকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানা গেছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ করেননি। টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. মাজাহরুল ইসলাম শিপলু বলেন, নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকরীগের নেতা মোবারক হোসেন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠু দুই জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগেরে সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত আহত মোবারক হোসেনকে দেখতে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে যান। তাকে চিকিৎসার জন্য সকল প্রকার সহাযোগিতার আশ^াস দেন এবং দোষীদের শাস্তির দাবী জানান। এ সময় উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শামীম আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক আবিদ হোসেন শান্ত, আওয়ামীলীগের নেতা রানাসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেরে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।