মির্জাপুরে পল্লী সমিতির অতিরিক্ত ভুয়া বিলে দিশেহারা দেড় লাখ গ্রাহক

 

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অতিরিক্ত ভুয়া বিলে দিশেহারা হয়ে পরেছে প্রায় দেড় রাখ গ্রাহক। ভুক্তভোগি গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, একটি মিটারের বিপরীতে একজন গ্রাহককে বিল প্রতি দেড় থেকে দুই গুন এবং কোন কোন গ্রাহককে চার থেকে পাঁচগুন পর্যন্ত অতিরিক্ত ভুয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেড় লাখ গ্রাহককে জিম্মি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করতে গিয়ে নিম্ন আয়োর মানুষ বেশী বিপাকে পরেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আজ শনিবার মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আবাসিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পের মালিক ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধিনে মির্জাপুর উপজেলা সদরে বাওয়ারকুমারজানি এলাকায় একটি এবং গোড়াই শিল্পাঅঞ্চলের গোড়াই এলাকায় টাঙ্গাইল কটন মিলস সংলগ্ন একটিসহ দুইটি জোনাল অফিস রয়েছে। দুইটি জোনাল অফিসের অধিনে মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, গোড়াই, রতিফপুর, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নে আবাসিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পসহ গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মে মাসের পল্লী বিদ্যুতের প্রতি মিটারের গ্রাহকের বিলে সব চেয়ে বেশী বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি মিটারের বিপরীতে একজন গ্রাহককে বিল প্রতি দেড় থেকে দুই গুন এবং কোন কোন গ্রাহককে চার থেকে পাঁচগুন পর্যন্ত অতিরিক্ত ভুয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। মির্জাপুর পৌরসভার একটি বাসার ভাড়াটিয়া (আবাসিক গ্রাহক) সুরাইয়া বেগম অভিযোগ করেন, চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে তার মিটারে বিল এসেছে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০শ টাকা। মে মাসে তাকে বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ১১শ টাকা। তার ধারনা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কারসাজির কারনে অতিরিক্ত বিল নেওয়ার জন্য তাকে ভুয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুরাইয়া বেগমরে মত গোড়াইয়ের বাবুল সিকদার, জামুর্কির আবুর হাসেম, বাঁশতৈলের আব্দুল কাদের, আজগানার চাঁন মিয়াসহ অন্তত ৩০ জন গ্রাহক এমন অভিযোগ করেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেচেন, তাদরে নামে অতিরিক্ত বুয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হলেও মিটারের রিডিংয়ের সঙ্গে বিল কপির সঙ্গে হিসেবর মিল নেই। এখাবে প্রতিটি গ্রাহককে জিম্মি করে পল্লী বিদু্যু বিভাগ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বরে ভুক্তভোগি অসহায় গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। বিষয়টির দিকে নজর দেওয়ার জন্য এবং তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্তা নেওয়ার জন্য আবাসিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পের মালিক ও গ্রাহকরা জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-এর মির্জাপুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জসিম উদ্দিন বলেন, এ উপজেলায় দুইটি জোনাল অফিসের অধিনে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। এ মাসে বিল বেশী হওয়ার মুলক কারন হচ্ছে লোড শেডিং কম। বিদ্যুৎ বেশী ব্যবহার হয়েছে। ফলে প্রতিটি মিটারের বিপরীতে একটু বেশী বিল হয়েছে। অনেক সময় গ্রাহকরা লোড শেডিং এর কথা বিবেচনা না করেই ঢালাও ভাবে অভিযোগ করেন বেশী বিল হয়েছে। এটা ঠিক নয় বলে তিনি দাবী করেন। তার পরও যদি কোন গ্রাহকের নামে খুব বেশী বিল হয়েছে বলে তিনি মিনে করেন, তাহলে অফিসে আসলে বিল সংসোধন করে দেওয়া হবে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here