মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
শ^শুর বাড়িতে জাহাঙ্গীর আলম (২৫) নামে ছাত্রদলের নেতার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক। জাহাঙ্গীরের পরিবারের দাবী শ^শুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করেছে। মৃত্যুর কারন জানতে চাইলে তার শ^শুর ও লোকজন মিলে জাহাঙ্গীর আলমের বাবা এবং পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে।
আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মোশারফ হোসেন সাকিল আহমেদ জানান, জাহাঙ্গীরের পিতার নাম আমজাদ হোসেন। জাহাঙ্গীর বাঁশতৈল মো. খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। ন¤্র ও ভদ্র ছেলে হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত ছিল। তার পরিবার বিএনপি ও জাহাঙ্গীর আলম ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সাবেক এমপি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর ¯েœহ ও আস্থাভাজন ছিল। গত চার মাস পুর্বে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মেদি খালপার নামাসুলাই গ্রামের মামাতো বোন শিফার সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়। শিফার বাবার নাম সালাউদ্দিন মিয়া। শিফা ও জাহাঙ্গীরের মধ্যে প্রেম করে বিয়ে হলেও দুই পরিবারের মধ্যে তেমন বনিবনা ছিল না। দুই পরবিারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো বলে অভিযোগ রয়েছে। জাহাঙ্গীরের পিতা আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেন গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুস্থ্য সবল জাহাঙ্গীর শ^শুর বাড়িতে যায়। সকালে শ^শুর বাড়ি থেকে খবর আসে রাতে তার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে তার শ^শুর বাড়ি কালিয়াকৈর উপজেলার মেদি খালপার নামাসুলাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। মৃত্যুর কারন জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরের শ^শুর সালাউদ্দিন ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়। জাহাঙ্গীরের বাবা আমজাদ হোসেন, তার সহপাঠী এবং এলাকাবাসির অভিযোগ শ^শুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যা করেছে। বিষয়টি সন্দেহ জনক হলে মির্জাপুর ও কালিয়াকৈর থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে ময়না তদন্তের জন্য জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জাহাঙ্গীর আলমের হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন তার বাবা আমজাদ হোসেন।
এ ব্যাপারে জাহঙ্গীরের শ^শুর সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে খাবর পর জাহাঙ্গীর ঘুমাতে যায়্ হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে রাতেই মারা যায়। তাকে হত্যা করা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন। বিভিন্ন অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ রিয়াদ মাহমুদ পিপিএম সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রদলের নেতা জাহাঙ্গীর আলমের শ^শুর বাড়িতে রহস্য জনক মতৃ্যু হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। তার বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ময়ন তদন্ত রিপোর্ট এবং অভিযোগ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলমের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াসসহ তার পরিবারের উপর গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রউফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার সালাউদ্দিন আরিফ, যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আনোয়ার পারভেজ শাহআলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম শফিকুল ইসলাম ফরিদ ও আলম মৃধা।