মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাতের আধাঁরে বিতর্কিতদের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবী জানিয়েছেন পূজারি ও ভক্তবৃন্দ। আহবায়ক কমিটি বাতিল ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে এলাকায় ও সমাজে গ্রহনযোগ্য এবং ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবী জানিয়েছেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ টাঙ্গাইল জেলা নেতৃবৃন্দ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন আহবায়ক কমিটি বাতিল করে ২/১ দিনের মধ্যে যোগ্যদের ও এলাকায় গ্রহনযোগ্যদের মুল্যায়ন করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক এবং সাধারন সম্পাদক বাবু প্রমথেস গোষ্মামী সংকর। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১৫ জুলাই টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য। ঐ সভায় পূজা উদয়াপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ভি এন চ্যাটার্জি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এড. কিশোর রঞ্জন, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর কুমার পাল, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে ও সাধারন সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুনসহ নেতৃবৃন্দ। গত ২ আগস্ট জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্রে আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক এবং সাধারন সম্পাদক প্রমথেস গোষ্মামী সংকরকে নির্দেশনা দেন।
এদিকে জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নির্দেশ অমান্য করে একটি চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের গ্রহন যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের না জানিয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কয়েকজন বিতর্কিতদের নামের তালিকা দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব জমা দেন। একটি প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় জেলা নেতৃবৃন্দ রাতের আধাঁরে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ২২ আগস্ট ঐ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়ে চিঠি দেন। কমিটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলককে আহবায়ক এবং বাবু স্বপন কুমার মন্ডল, বিপ্লব কুমার সাহা, যতীন্দ্র নাথ, পিষুষ কান্তি সাহা নন্দ, তাপস সাহাসহ ২৫ জনকে সদস্য করেছেন। আহবায়ক কমিটিতে যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে দুই একজন বাদে অধিকাংশ বিতর্কিত এবং এদের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে বিক্ষুব্দরা জানান। ঐ আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের পূজারি ও ভক্তদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি-সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা এই আহবায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সঠিক তথ্য না দিয়ে একটি পক্ষ মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি নিয়েছে। ফলে আহবায়ক কমিটি নিয়ে এলাকায় নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐ আহবায়ক কমিটি বাতিল করে ২/১ দিনের মধ্যে নতুন ভাবে মির্জাপুর উপজেলায় পূজা উদযান পরিষদের কমিটি দেওয়া হবে।