মির্জাপুরে রাতের আধাঁরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জমি দখলের অভিযোগ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি

বিশেষ প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল তেলিপাড়া গ্রামে রাতের আধাঁরে আবজাল হোসেন নামে এক নিরীহ পরিবারের জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। আজগানা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার, তার বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিকদার ও ভাতিজা আতিকুর সিকদারের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের ভাড়াটে লোকজন রাতারাতি জমি দখলে নামেন বলে ভুক্তভোগি পরিবার অভিযোগ করেন। তাদের ভয়ে নিরীহ আবজালের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান আব্দুল কাদরে সিকদার ও তার লোকজন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আবজাল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযৈাগ করেছেনে।
এদিকে ন্যায় বিচার চেয়ে অসহায় ঐ পরিবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবুল হাসেমের আদালতে আবেদন করলে বিচারক জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি (নিষেধাজ্ঞা) করে মির্জাপুর থানা পুলিশ এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গতকাল সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) নির্দেশ প্রদান করেছেন। মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল গ্রামের তেলিপাড়া মৌজায় জমি দখলের এ ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগি আবজাল হোসেন অভিযোগ করেন, তার পিতা মৃত মনির উদ্দিন ও দুই বোন হনুফা, কদভানু এবং ভগ্নিপতি ২০০৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর ১২৯১ নং দলিলের মাধ্যমে তেলিপাড়া মৌজায় ২২৯ দাগের ৫২ খতিয়ানের ২২ শতাংশ জমি লিখে দেন। জমির সমস্ত কাগজপত্র তার নামে রয়েছে। এই জমি তিনি ভোগ দখল করে আসছেন।
এদিকে ২০১৯ সালে প্রতারনার মাধ্যমে আজগানা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বেলতৈল গ্রামের মৃত মজিবর সিকদারের ছেলে আব্দুল কাদের সিকদার, তার বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিকদার ও ভাতিজা আতিকুর সিকদার তার বোন কদভানু ও হনুফার নিকট থেকে ২২ শতাংশ জমি লিখে নেন বলে দাবী করে আসছেন। গত ৩/৪ দিন পুর্বে তাদের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন ভাড়াটে লোকজন রাতের আধাঁরে জমি জবর দখলের চেষ্টা চালায়। বাঁধা দিলে গেলে তাদের প্রাণ নামের হুমসকি দেয়। এ ব্যাপারে গত রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) স্বারক নং ১৭৫৮(২) এবং পিটিশন নং-৮৬২/২০২২ আব্দুল কাদের সিকদার, লতিফ সিকদার, আতিকুর সিকদার, শাজাহান, সোহেল ও আলকাছসহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামী করে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবুল হাসেমের নিকট ন্যায় বিচার চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনর পর বিচারক উক্ত জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। বিচারক নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই চেয়ারম্যান ও তার লোকজন নানা ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার, তার ভাই আব্দুল লতিফ সিকদার এবং ভাতিজা আতিকুর রহমান বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই তেলিপাড়া মৌজায় ২২৯ খতিয়ানের ৫২ দাগের ২২ শতাংশ জমি তারা মনির উদ্দিনের দুই কন্যা কদভানু এবং হনুফার নিকট থেকে দলিল মুলে ক্রয় করে দখল বুঝে নিয়ে মাটি ভরাট করেছেন। বর্তমানের হাল সনের খাজনা খারিজও রয়েছে। হিসাব নং-৪৮০, নামজারি নং-২৩৫৪, খতিয়ান নং-৪৯৭ (২০১৯-২০২০)। রাতের আধাঁরে কারও কোন জমি দখল করা হয়নি। আবজাল হোসেন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে লোকজনকে বিভ্যান্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার এসআই মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আবজাল হোসেন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া তিনি ন্যায় বিচার চেয়ে টাঙ্গাইলের আমলী আদালতে আবেদন করলে বিচারক ঐ জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি (নিষেধাজ্ঞা) করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here