মির্জাপুরে একই দিনে বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ত্রি-বাষিক সম্মেলন

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে একই দিনে বিএনপির দুই গ্রুপ পাল্টাপাল্টি ত্রি-বাষিক সম্মেলন ঘোষনা করায় নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আগামীকাল রবিবার (৯ অক্টোবর) বিএনপির দুই গ্রুপ মির্জাপুরে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘোষনা করেছে। এক গ্রুপে নের্তৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। অপর গ্রুপে নের্তৃত্বে দিচ্ছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাবির মহসীন হলের সাবেক জিএস মো. সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব এবং জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ফিরোজ হায়দার খান।
আজ শনিবার (৮ অক্টোবর) উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানান, কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের নির্দেশনায় সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী মির্জাপুর পৌরসভা এবং উপজেলা বিএনপির ত্রি-বাষিক সম্মেলন তারিখ ঘোষনা করেন আগামীকাল রবিবার ৯ অক্টোবর। খোলা স্থানে সম্মেলনের জন্য প্রশাসনের অনুমোদন না পাওয়ায় গোড়াইল গ্রামে তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় স্থান নির্ধারন করে দাওয়াতপত্র দেওয়া হয়েছে। দাওয়াতপত্রে অতিথি হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয়, জেলা এবং উপজেলা নেতৃবৃন্দের নাম রয়েছে। অপর দিকে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমুল্যায়নসহ নানা অভিযোগ এনে বিএনপির অপর গ্রুপ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাবির মহসীন হলের সাবেক জিএস মো. সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব এবং জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ফিরোজ হায়দার খান পাল্টা ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘোষনা করেছেন। স্থান হিসেবে তারা মির্জাপুর সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে মঞ্চ স্থাপন করছেন। গতকাল শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাতে এ বিষয়ে মির্জাপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। দুই গ্রুপে পাল্টাপাল্টি ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘোষনা দেওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পরেছে এবং দুই গ্রুপের মধ্যেই দেখা দিয়েছে টানটান উত্তেজনা। যে কোন সময় রক্তপাত হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী বলেন, মুল দলের ত্রি০বার্ষিক সম্মেলনের খবর শুনে যারা পাল্টা সম্মেলন ঘোষনা করেছেন তারা দল থেকে জনবিচ্ছিন্ন এবং বহিঃস্কৃত। ফিরোজ হায়দার খান দল থেকে অনেক আগেই বহিঃস্কৃত। এলাকায় এবং দলে তাদের কোন গ্রহন যোগ্যতা নেই। তারা দলের কেউ নয়। দলকে অস্থিতিশীল করাই তাদের কাজ। দলকে সু-সংগঠিত রাখতে কেন্দ্রীয়, জেলা এবং উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের দিক নির্দেশনায় সম্মেলনের মাধ্যমে সুন্দর ও গ্রহনযোগ্য একটি নতুন কমিটি দেওয়া হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট আহমেদ আযম খান।
এ ব্যাপারে অপর গ্রুপের টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো. ফিরোজ হায়দার খান বলেন, আবুল কালাম আজাদি সিদ্দিকী ত্যাগী নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন না করে তার পছন্দ অনুসারে পকেট কমিটি করতে যাচ্ছেন। এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা তা কখনো মেনে নেবেন না। বিগক দিনেও তিনি একই কাজ করেছেন। সকলের পরামর্শে আগামীকাল রবিবার মির্জাপুর সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ও পৌরসভার নতুন কমিটি ঘোষনা করা হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাবির মহসীন হলের সাবেক জিএস মো. সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বিএনপির কোন পক্ষই তাদের কাছে সম্মেলনের জন্য কোন অনুমোদন নেয়নি। অনুমোদন দেওয়ার একতিয়ার জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় এবং ডিএসবির। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এলাকায় যাতে কোন অপৃতকির ঘটনা না ঘটে সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here