মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আজাগানা ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা এলাকার বেলতৈল গ্রামে ক্লুলেন্স চাঞ্চল্যকর আনোয়ারা বেগম খুনের ঘটনার নয় দিন পর রহস্য উৎঘাটন হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত মুল ঘাতক প্রথম স্বামী পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করলে পলাশ তার সাবেক স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে হত্যার কথা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) মির্জাপুর থানায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম। এর আগে আনোয়ারা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী মুয়াজ মিয়াকে ঘাটাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার পিতার নাম মৃত মফিজ মন্ডল। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) তাকে গ্রেফতারের পর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জহির এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার মির্জাপুর থানাপুলিশ সুত্র জানায়, আনোয়ারা বেগমের তার পিতার নাম মো. মকবুল হোসেন। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার সৈয়দগ্রাম। গত ১১ বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল। আনোয়ারা বেগমের প্রথম স্বামীর নাম পলাশ মিয়া। তার পিতার নাম সেলিম মিয়া, গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার বাদেমাজিরা গ্রামে। ঐ ঘরে আসিফ নামে পুত্র সন্তান হলে পারিবারিক ঝামেলায় ছাড়াছাড়ি হয়। পুত্র আসিফের বয়স এখন (৭) বছর। পরিবারের অভাব অনটনের মধ্যে সন্তান নিয়ে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে পোষাক কারখানা এবং হাটুভাঙ্গা এলাকায় বিভিন্ন মিলে শ্রমিকের কাজ করতো। গত কোরবানী ঈদের সময় চিতেশ^রী এলাকার নুরজাহান বেগম নামে এক ঘটকের মাধ্যমে মুয়াজের সঙ্গে তার বোন আনোয়ারার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। দ্বিতীয় বিয়ের পর হাটুভাঙ্গা বেলতৈল গ্রামে শহিদ মিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো।
গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাতের খাবার খেয়ে সন্তান নিয়ে বাসায় ঘুমিয়ে পরে। মোবাইলে যোগাযোগে করে প্রথম স্বামী পলাশ মিয়া আনোয়ারা বেগমের ভাড়া বাসায় এসে রাত্রী যাপন করে। পুর্ব সত্রুতা এবং ডিভোর্স দেওয়ার জের হিসেবে ক্ষোভের কারনে পলাশ আনোয়ারা বেগমকে খুনের পর লাশ ঘরের মেঝেতে রেখে পালিয়ে যায়। গত বুধবার সকালে শিশুর কাঁন্নার শব্দ পেয়ে বাড়ির মালিক শহিদের স্ত্রী সালেহা বেগম দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখেন মেঝেতে তার বোন আনোয়ারা বেগমের লাশ পড়ে আছে। আনোয়ারা বেগমের ভাই আবুল হোসেন বাদী হয়ে গত ১২ অক্টোবর মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বিতীয় স্বামী মুয়াজকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ১৬ অক্টোবর আনোয়ারা বেগমের প্রথম স্বামী পলাশকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফারের পর আদালতে পলাশ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে, ডিভোর্স দেওয়ার কারনে প্রতিশোধ হিসেবে সাবেক স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে ঘটনার দিন রাতে গলাটিপে হত্যা করেছে। ঘটনার সুত্র হিসেবে দ্বিতীয় স্বামী মুয়াজও জেল হাজতে রয়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) মির্জাপুর থানায় এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন কার হয়। সংবাদ সম্মেলনে ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আনোয়ারা বেগম হত্যা রহস্য উৎঘাটান হয়েছে। তাকে হত্যা করেছে তার প্রথম স্বামী পলাশ মিয়া। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তার দ্বিতীয় স্বামী মুয়াজও জেল হাজতে রয়েছে।