এমপি-ইউএনওর নির্দেশে মির্জাপুরে বংশাই নদীর বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
স্থানীয় সাংসদ ও ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিনের নির্দেশে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বংশাই নদীর ফতেপুর এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুর রউফ মিয়া স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও ইউপি সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। নদীর ব্যাপক ভাঙ্গনে দুইশ বছরের ফতেপুর হাট ও বাজার মারাত্বক ভাবে হুমকির মুখে। ইতিমধ্যে ৫০-৬০ টি দোকান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, বংশাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গনের খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সমন্ময় করে ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় স্থানীয় ভাবে বাঁধ নির্মান এবং ব্লগ ফেলা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
অনুসন্ধা জানা গেছে, নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মসজিদ, মন্দির, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট এবং ফসলি জমিসহ গাছপালা। ফতেপুর বাজার সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের মির্জাপুর-ফতেপুর-কুরনী রাস্তা ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হওয়ায় মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় আতংকিত এলাকার লোকজন। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারগুলো জানিয়েছেন, ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কয়েক শতাদিক পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ও ফসলিজমি হারিয়ে তারা আজ পথে বসেছে। সরকারী ভাবে বড় ধরনের কোন সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন। আজ মঙ্গলবার ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিকত্রই দেখা গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া জানান, বংশাই নদীর ফতেপুর, থলপাড়া, হিলড়া আদাবাড়ি, পারদিঘী, চাকলেশ^র, বৈলানপুর, ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল, গাড়াইলসহ ১০-১২ টি গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে ফতেপুর বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট হুমকির মুখে। এই ইউনিয়নে প্রতি বছরই বংশাই নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়। এ বছল ভাঙ্গনের মাত্রা তীব্র আকার ধারন করছে। নদী ভাঙ্গনে ফতেপুর বাজার সংলগ্ন পাকা রাস্তা বিলিন হয়ে মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ. হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার এখন হুমকির মুখে। খান আহমেদ শুভ এমপি এবং ইউনিও শাকিলা বিনতে মতিনের নির্দেশে ভাঙ্গন প্রতিরোধে বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শূরু হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
অপর দিকে লৌহজং নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, হাট বাজারসহ ফসলি জমি। বংশাই নদীর থলপাড়া ব্রিজ, ত্রিমোহন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ব্রিজ, কোদালিয়া এলাকায় লতিফপুর ব্রিজ, হাটুভাঙ্গা ব্রিজ, লৌহজং নদীর উপর নির্মিত গুনটিয়া ব্রিজ, বরাটি এলাকায় বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী ব্রিজ, পুষ্টকামুরী ব্রিজ, পাহাড়পুর ব্রিজ, বহুরিয়া এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু ব্রিজ এবং ওয়ার্শি ব্রিজ হুমকির মুখে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য প্রকল্প তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্ধ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here