মির্জাপুরে অবৈধ মাটি কাটা বন্ধে ইউএনও-এসিল্যান্ডের সাঁড়াশি অভিযাননে জেল জরিমানা যন্ত্র জব্দ

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পাহাড়ি লাল মাটির টিলা, নদী ও নদীর চর এবং ফসলি জমির মাটি প্রকাশ্যে ও রাতের আধারে ভ্যেকু ও ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ ভাবে কেটে নেওয়া বন্ধে ইউএনও-এসিল্যান্ড জিহাদ ঘোষনা করেছেন। অবৈধ মাটি কাটা বন্ধে চলছে দিন রাত সাঁড়াশি অভিযান। অভিযানে ভ্যেকু, ড্রাম ট্রাকসহ অন্তত ২০টি মাটি কাটার যন্ত্র জব্দ করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা জরি মানা এবং অর্ধশত মামলা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন মাটি চোরকে জেল দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, ভুমি অফিস এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাায় খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউএনও-এসিল্যান্ড এ বিষয়ে বলেন, অবৈধ মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিহাদ ঘোষনা করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। তাদের অভিযান চলমান থাকবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অফিস সুত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই, আজগানা, লতিফপুর, তরফপুর ও বাঁশতৈল এই পাঁচ ইউনিয়নে পাহাড়ি টিলার লাল মাটি অবৈধ ভাবে চুরি করে কেটে নিচ্ছে একটি চক্র। প্রকাশ্যে ও রাতের আধারে চলছে এ মাটি কাটার মহোৎসব। ফলে এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য যেমন নষ্টহ চ্ছে, তেমনি এলাকার রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া ও বহুরিয়া ইউনিয়নের বংশাই ও লৌহজং নদী এবং এর চর এবং ফসিল জমির উপর ভ্যেকু ও ড্রেজার বসিয়ে চলছে মাটি ও বালি চুরি। ফলে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ঘটছে।
এদিকে এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে মাটি চুরি বন্ধে অভিযানে নামেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন, এসিল্যান্ড মাসুদুরর হমান ও মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা জরিমানা, ১০-২০ টি ট্রাম ট্রাক, ২ টি ড্রেজার, একটি নবেট, এক হাজার মিটার ড্রেজারের পাইপ জব্দ করেছেন। মামলা দিয়েছেন অর্ধশত এবং কয়েক জনকে কারা দন্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে ইউএনও ও এসিল্যান্ড অফিস নিশ্চিত করেছেন।
সর্বশেষ গতকাল রবিবার(৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার গোড়াই, লতিফপুরও ফতেপুর ইউনিয়নে অবৈধ মাটি কাটা বন্ধে অভিযান চালিয়ে জিয়া, সুজন, মহসীন ও শামীমসহ পাঁচ জনকে আটক করে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, ১১ টি ড্রাম ট্রাক ও কয়েকটি ভ্যেকু জব্দ করেছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাকিলা বিনতে মতিন এবং এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারী সম্পদ রক্ষা করাই আমাদের মুল লক্ষ ও উদ্দেশ্য। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় একটি চক্র প্রভাব বিস্তার করে পাহাড়ের লাল মাটির টিলা, নদী ও নদীর চর এবং ফসলির জমির মাটি ভ্যেকু ও ড্রেজার বসিয়ে প্রকাশ্যে ও রাতের আধারে কেটে নিচ্ছে। খবর পেয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মাটি চোর চক্রের সদস্যরা যত ক্ষমতাশালীই হোক না কেন কোন অবস্থায় তাদের ছাড় দেওয়া হবেনা। মোবাইল কোট পরিচালনা করে জরিমনা, জেলসহ মাটি কাটার যন্ত্রপাতি ও ট্রাক জব্দ করা হচ্ছে। অভিযান আরও কঠোর ভাবে পরিচালনা করা হবে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here