মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
ভয়াবহ লোডশেডিং এর কবলে পরেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর। লোড শেডিং এর কারনে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে শতাধিক শিল্পকারখানায় উৎপাদন মারাত্বক ভাবে ব্যহৃত হচ্ছে। ফলে জন জীবন অতিষ্ঠ্য হয়ে উঠেছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম এবং সরবরাহ না পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে তারা বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে পবিত্র রমজান মাসে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীতে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসি গতকাল শনিবার বহুরিয়া বাজারে মানব বন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। দুই এক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নতি না হলে তারা বৃহত্তর কর্মসুচী ঘোষনা দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করবে বলে ঘোষনা দিয়েছেন। আজ রবিবার (৭ এপ্রিল) মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের হাতে পুরোপুরি জিম্মি হয়ে পরায় গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় বিদ্যুৎ অফিসে হামলার আশংকা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই মির্জাপুরে ভয়াবহ লোড শেডিং চলছে। এক দিকে লোড শেডিং অপর দিকে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। একই ভাবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, সখীপুর, বাসাইল, নাগরপুর, দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় একই অবস্থা বলে ভুক্তভোগি লোকজন জানিয়েছেন। এদিকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চল। এখানে ছোট বড় মিলে শতাধিক শিলকারখানা হয়েছে। এসব কারখানায় উৎপাদন হয় মুলত বিদ্যুতের উপর। গত এক মাস ধরে মারাত্ব ভাবে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় তাদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে মালিক পক্ষ অভিযোগ করেছে। বৃহৎ কারখানার মধ্যে রয়েছে নাহিদ কটন মিলস লি. কমফিট কম্পোজিট নীট লি. সাইথ ইস্ট টেক্্রটাইল মিলস লি. মেঘনা গ্রুপ অপ ইন্ডাসট্রিজ, শিরিন স্পিনিং মিলস লি. উত্তরা স্পিনিং মিলস লি. নিউটেক্্রট গ্রুপ অব ইন্ডাসট্রিজ, খান গার্মেন্টস, নাসির গ্রুপ অব ইন্ডাসট্রিজ, বেঙ্গল এন এক এফ লি. উল্লেখ যোগ্য।
কমফিট্র কম্পোজিট নীট লি. এর জেনারেল ম্যানেজার মো. ফারুক হোসেন এবং নাহিদ কটন মিলের জেনারেল ম্যানেজার মো. শহীদুল আলম বলেন, এক দিকে গ্যাস সংকট, অপর দিকে নতুন করে যোগ হয়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। উৎপাদন প্রায় শুন্যের কোঠায় নেমে আসায় তাদরে ্রপতি দিন কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সুত্র জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে তামপাত্রা ৩৯-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে। তাপ দাহের কারনে নিয়মিত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। তার উপর বৃষ্টি নেই। মির্জাপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের অধিনে শিল্পকারখানাসহ গ্রাহক রয়েছে ৯০ হাজার এবং গোড়াই পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের অধিনে শতাধিক শিল্প কারখানাসহ গ্রাহক রয়েছে ৭০ হাজার। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫৬ মেগাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে এখন বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ২৪-২৫ মেগাওয়াট। ফলে বাধ্য হয়ে লোড শেডিং হচ্ছে।
৫ নং বানাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকী ও ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান মাসুদসহ অন্তত ১৫ জন ভুক্তভোগি অভিযোগ করেন, ভয়াবহ লোড শেডিং হওয়ায় তারা চরম বিপাকে পরেছেন। লোড শেডিং এর কারনে সেহরী ওইফতারও ঠিকমত করতে পারচেন না। এক দিকে প্রচন্ড গরম অপর দিকে ভয়াবহ রোডশেডিং। লোড শেডিং এর কবলে শিল্পাঞ্চলসহ কৃষি কাজে মারাত্বক সমস্যা দেখা দিয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গড়ে তিন থেকে চার ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ করেন।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ;্যুৎ সমিতি-১ এর মির্জাপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাকির হোসেন ও গোড়াই জোনাল াফিসের ডিজিএম খালিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, মির্জাপুরে প্রায় এক লাখ ৬৯ হাজার গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৫৬ মেগাওয়াট। সরবরাহ পাচ্ছে ২৪-২৫ মেগাওয়াট। গরম বেশী ও বৃষ্টি না হওয়ায় লোড শেডিং হচ্ছে।