মির্জাপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে দূবৃত্তদের হামলা এমপির ছবিসহ আসবাবপত্র ভাংচুর

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
এলাকায় আধিপত্ত বিস্তার ও সামাজিক কবরস্থানের অনুদানের আত্নসাতকৃত প্রায় কোটি টাকার হিসাব চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে একদল দূবৃত্ত স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে হামলা চালিয়ে খান আহমেদ শুভ এমপির ছবিসহ আসবাবপত্র ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। ছিরে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ফেস্টুন। আলমারী ভেঙ্গে লুট করা হয়েছে নগদ টাকা। ঘটনার পর এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গতকাল শনিবার (২৭ জুলাই) রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কি ইউনিয়নের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন জামুর্কী বাস স্টেশনের উপজেলা স্বেচ্ছবকলীগের সাবেক আহবায়ক অপু শেখের অফিস ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম জরিফ, রিফাত, হাসান, শান্ত, জুয়েল, রাকিবসহ ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন অপু শেখ।
আজ রবিবার (২৮ জুলাই) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে দূবৃত্তরা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা অপু শেখ ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে হামলার ও ভাংচুরের চিত্র। অপু শেখসহ জামুর্কি গ্রামের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে একটি সামাজিক কবরস্থান রয়েছে। ৩-৪ বছর পুর্বে মহাসড়ক প্রসস্ত করনের সময় কবরস্থানটি হাইওয়ে রোডে পরায় ফোরলেন কতৃপক্ষ কবরস্থানটির উন্নয়নের জন্য প্রায় ৮৮ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেন। এছাড়া বিভিন্ন সুধীজন আরও ৩০-৩৫ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেন বলে এলাকাবাসি জানান। ঐ সময়ে কবরস্থানের নেতৃত্বে ছিলেন খলিলুর রহমান খলিল, ফজল হোসেন, রেজাউল করিম জরিফ, জুয়েলসহ ১০-১২ জনের একটি কমিটি। নানা অযুহাতে ঐ কমিটি প্রায় কোটি টাকা আত্নসাত করে বলে অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি জামুর্কি গ্রামবাসি কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য অপু শেখকে আহবায়ক ও আব্দুর রাজ্জাক, মোক্তার হোসেন, দুলাল, শাহআলম, সাজ্জাত ভুইয়া, জয়নাল, ইউসুফ ও সেলিমকে সদস্য করে একটি কমিটি করেন। এই আহবায়ক কমিটি ও গ্রামবাসি মিলে পুর্বের কমিটির সদস্যদের কাছে কবরস্থানের টাকার হিসেব চাইলে শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ। এলাকায় আধিপত্ব বিস্তার এবং কবরস্থানের প্রায় কোটি টাকা আত্নসাতের দ্বন্ধের জের হিসেবে প্রতিপক্ষ গতকাল শনিবার রাতে রেজাউল করিম জরিফ, রিফাত, হাসান, শান্ত, জুয়েল, রাকিবসহ ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী অপু শেখের অফিস ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে। খান আহমেদ শুভ এমপির ছবি ভেঙ্গে ফেলে দেয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ফেস্টুন ছিরে ফেলে।
এ ব্যাপারে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের সভাপতি ওসমান গনি প্রদীপ, সেক্রেটারী অপু শেখ ও কার্যকরী সদস্য ইমরান শেখ অভিযোগ করেন, জরিফ ও সেনা সদস্য লতিফের নেতৃত্বে ১০-২০ টি মোটর সাইকেল যোগে ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা এই হামলায় যোগ দেন। আলমারী ভেঙ্গে নগদ টাকা লুট করে নেওয়া হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এমপির ছবি ও ছিরে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ফেস্টুন। তারা এই ঘটনাটি পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম জরিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা এই হামলা ও ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত নয়। প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে ঘটনার খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেল) এ এস এম মনসুর মুসা ও মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক মো. আবুল বাশার মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক মো. আবুল বাশার মোল্লার সঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ কররা হলে তিনি বলেন, এলাকায় আধিপত্ত বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধের জের হিসেবে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। মাননীয় এমপি মহোদয়ের ভাংচুরকৃত ছবি জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
###

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here