মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনি, স্মৃতিসৌধ অর্জনে শ্রদ্ধাঞ্জলী, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে শান্তির প্রতিক পায়রা কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন। এ সময় এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান, পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুল, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা, ভাইস চেয়ারম্যান আজাারুল ইসলাম এবং ওসি মো. রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বীর শদিদের আত্বার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মির্জাপুরে উৎসব মুখর পরিবেশে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালিত
মির্জাপুরে ভাষা সৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রতিভা মুৎসুদ্দির ৮৮ তম জন্ম দিন পালন
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
ভাষা সৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত নারী জাগরণের অন্যতম অগ্রদুত ও আলোর দিশারী মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দির ৮৮ তম জন্ম দিন পালিত হয়েছে। আজ শনিবার ( ১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শুভ লগ্নে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভারতেশ^রী হোমসের প্রিন্সিপাল প্রতিভা মুৎসুদ্দি মিলনায়তনে এক অন্য রকম পরিবেশে কুমুদিনী পরিবার, ভারতেশ^রী হোমস এবং ভারতেশ^রী হোমসের ৮৪ এবং ৮৫ ব্যাচের প্রাক্তর ছাত্রীরা মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দির জন্ম দিন পালনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রিয় এই আলোচর দিশারীর জন্ম দিনে ভারতেশ^রী হোমসের প্রিন্সিপাল প্রতিভা মুৎসুদ্দি মিলনায়তন নানা সাজে সজ্জিত করা হয়। দিন ভার ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ৮৪ ও ৮৫ ব্যাচের প্রাক্তর ছাত্রীরা লাল কাপড়ে মোড়ানো মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দির একটি ভাষ্কর্য উপহার দেন। এর পর প্রাক্তন ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে কেক কাটেন মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দি। বয়সের ভারে ঠিকমত হাটতে না পারলেও ৮৮ তম জন্ম দিনে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রীদের কাছে পেয়ে তিনি আবেগ-আপ্লুত হয়ে পরেন। কখনো হাসতে আবার কখনো তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরতে দেখা যায়।
প্রাক্তন ছাত্রীদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছোট পর্দার এক সময়ের জনপ্রিয় শিল্প ও অভিনেত্রী আফসানা মিমি, বড় পর্দার অভিনেত্রী অরুনা বিশ^াস, রুনু করিম, ফারজানা হোসাইন কংকন, রাশিদা সুলতানা, আরতী মন্ডল, ভারতেশ^রী হোমসের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মীরা রায়, সরিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুক্তি সাহাসহ শতাধিক ছাত্রী। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ভারতেশ^রী হোমসের সিনিয়র শিক্ষিকা কবি ও সাহিত্যিক হেনা সুলতানা। সার্বিক সহায়তা করেন একজন গুনী ব্যক্তি ও প্রথিতযশা সাংবাদিক কিমসত খোন্দকার।
এ ব্যাপারে প্রাক্তন ছাত্রী জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসানা মিমি, অভিনেত্রী অরুনা বিশ^াস এবং মুক্তি সাহা বলেন, মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দি একজন নারী বা ব্যক্তি নন। তিনি নারী সমাজের কাছে এক তর্পন ও আদর্শ। তার মত নারীর হাতে শিক্ষা নিতে পেরে আজ আমরা সমাজের আলো বিতরন করতে পারছি। শহীদ দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আর পি সাহার) সান্নিত পেয়ে প্রতিভা মুৎসুদ্দি নীতি ও আদর্শের কাছে কখনো মাথা নত করেন না। তার হাত ধরেই কুমুদিনী পরিবার আজ দেশ ও বিদেশে অধিক পরিচিত। তিনি যুগের পর যুগ আমাদের মাঝে তার কৃত কর্মের কারনেই থাকবেন। ৮৮ তম জন্ম দিনের অনুষ্ঠানে কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়, এজি এম (অপারেশন) অনিমেশ ভৌমিক লিটন, ভারতেশ^রী হোমসের প্রিন্সিপাল মন্দিরা চৌধরী, কুমুদিনী নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল সিস্টার রীনা ক্রুস, নার্সিং স্কুলের মেট্রন সিস্টার দিপালী পেরেরা ও ভারতেশ^রী হোমসের শিক্ষক-কর্মচারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিস প্রতিভা মুৎসুদ্দি ৮৮ তম জন্ম দিনের শুভেচ্ছা বক্তব্যে ছাত্রীদের উদ্যেশে বলেন, আমর সময় ধীরে ধীরে শেষ হতে চলছে। জেঠা মনির সার্বিক সহযোগিতায় আমি যতদুর পেরেছি দেশ ও সমাজকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। জানিনা কতদুর পেরেছি। তোমাদের সামনে অনেক পথ। তোমরাই পারবে আগামীর জাতিকে অনেক কিছু দিতে। তোমাদের প্রতি আমার দোয়া ও আর্শিবাদ রইল।
মির্জাপুরে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদ মনিরের ইন্তেকাল ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়াবিদ মো. মনিরুজ্জামান মনির (৫৩) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না নিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। ক্রীড়াঙ্গনের একদন দক্ষ সংগঠক মনিরের অকাল মৃত্যুতে খেলোয়াড়সহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও মনিরুজ্জামান মনিরের দীর্ঘ দিনের সহপাঠী সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল জানান, মনিরুজ্জামানের পিতার নাম মৃত মো. ওয়াহিদ মিয়া। তার বাবা ছিলেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের সৈলসিন্দুর গ্রামে। বাবার চাকুরীর সুবাধেই মনিরের খেলাধূলায় আসা। মনিরুজ্জামান ছিলেন একদন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদ। তিনি একাধারে ফুটবল, ভলিবল, ক্রীকেট, হা-ডু-ডু, দাবা, হকি, বাস্কেট বল, ক্যারমহ প্রতিটি খেলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলার গন্ডি পেরিয়ে সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নারায়নগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন জাতীয় ক্লাবে সুনামের সঙ্গে খেলাধুলা করেছেন। এছাড়া সাভার বিকেএসপির নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল জেরা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও মির্জাপুর উপজেলার ক্রীড়া সংস্থার প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে যুব ও তরুন সমাজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লীগ খেলার আয়োজন করে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সর্বশেষ তিনি নারী খেলোয়াড় দল গঠন করেছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার বাদ মাগরিক মির্জাপুর কলেজ রোডের প্রদীপ আর্ট সেন্টারের সামনে মনির হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরেন। সঙ্গে সঙ্গে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকগন তাকে মৃত ঘোষনা করেন। আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় মির্জাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা এবং বেলা এগাটায় ঘুগি গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষ ঘুগি সামাজিক কবরস্থানে তাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দায়ন করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, এক ভাই এবং তিন বোনসহ গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। ক্রীড়াবিদ মনিরের অকাল মৃত্যুতে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম, খান আহমেদ শুভ এমপি, উপজেলা মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি শাকিলা বিনতে মতিন, পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুল, মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ ও সাদারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত গভীর মোক ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জনিয়েছেন। এছাড়া শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন সাংবাদিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মির্জাপুরে সাংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শোক সভা
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান টিভির মির্জাপুর প্রতিনিধি মো. নাজমুল ইসলামের পিতা আলহাজ¦ মো. আব্দুর রশিদ মিয়ার মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বাদ আসর রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে রিপোর্টার্স ইউনিটি এ শোক সভার আয়োজন করে। রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক এবং মোহনা টেলিভিশনের সাংবাদিক মীর আনোয়ার হোসেন টুটুলের সভাপতিতে শোক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাসুদুর রহমান। এ সময় মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বাবর, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনিরসহ মির্জাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল সদস্য ও সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার পর মির্জাপুর থানা মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা ফরিদ হোসাইন দোয়া পরিচালনা করেন। রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিক নাজমুলের হাতে শোক বার্তা তুলে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, গত ১ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুর রশিদ মিয়া মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার এক নং ওয়ার্ডের পুষ্টকামুরী গ্রামে।
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে আন্তঃহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নজরুল হাউজ চ্যাম্পিয়ন
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে আন্তঃহাউজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নজরুল হাউজ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স আপ হয়েছে ফজলুল হক হাউজ। ২০২২-২০২৩ শিক্ষা বর্ষে অভার অল শ্রেষ্ঠ হয়েছে ফজলুল হক হাউজ। ৫ দিন ব্যাপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ইউনিভাসির্টি অব প্রফেশনালস এর উপচার্জ মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম বিএসপি, এনডিসি, এএফডাব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি। বিশেষ অতিথি ছিলেন তামান্না আফরোজ।
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ রিয়াজ আহমেদ চৌধুরী কর্নেল এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত ১১ ডিসেম্বর উৎসব মুখর পরিবেশে কলেজের ক্যাডেটদের অংশ গ্রহনে আšঃÍহাউজ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্ধোধন করেন অধ্যক্ষ রিয়াজ আহমেদ চৌধুরী কর্নেল। ৫ দিন ব্যাপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আজ বৃহস্পতিবার ছিল সমাপনী। বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে উৎসব মুখর আনন্দঘন পরিবেশে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, ভাইস প্রিন্সিপাল এটি এম মোয়াজ্জেম হোসেন, এডজুট্যান্ট মেজর আবু সালেহ ইয়া-ইয়া, শিক্ষক মন্ডলী, অভিভাবক, ক্যাডেট, ক্রীড়াবিদ ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালিত
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন উপজেলা পরিষদ চত্তরে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ অর্জনে পুষ্পস্তবক অর্পন ও এক মিনিট নিরবতা পালনসহ সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে। বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক দুর্লভ বিশ^াস। এ সময় এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান, পৌরসভার মেয়র সারমা আক্তার শিমুল, ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকসহ গন্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন।
নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার কঠোর হুমকি দিয়েছে বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ মিয়া। চেয়ারম্যানের এই হুমকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম আতংক। উপজেলা আওয়ামীলীগের সবাপতি মীর শরীফ মাহমুদসহ আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ ও এলাকার সাধারণ ভোটারগন বিতর্কিত এই চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তিন নং ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া ভোটারদের ভয়ভিতি দেখিয়ে এই বক্তব্য দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছে।
আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ফতেপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০ মুসুল্লি এবং আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সমর্থিত ১৫ জন নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, গতকাল মঙ্গলবার ছিল ফতেপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল। অনুষ্ঠানে ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী ধর্মীয় শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নানের সভাপেিত্ব প্রধান অতিথি ছিলেন চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া। বক্তৃতায় চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা জানেন সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকার প্রার্থী দিয়েছেন খান আহমেদ শুভকে। তিনি বর্তমান এমপি। অপর দিকে আওয়ামীলীগের দুই জন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা বয়স্ক ব্যক্তি মীর এনায়েত হোসেন মন্টু একজন অসুস্থ্য ও মানুষিক ভারসাম্যহিন। তাকে ভোট দিলে এলাকায় কোন উন্নয়ন হবে না। অপর প্রার্থী সানি নতুন মুখ। ভোটরদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন আপনাদের ভোট দিতে হলে নৌকার প্রার্থী খান আহমেদ শুভকে দিতে হবে। যদি নৌকায় ভোট না দেন তাহলে আপনাদের ভোট কেন্দ্রে আসার দরকার নেই। এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিএনপির ভোটারদের কোন ভাবেই ভোট কেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবে না। তার বক্তব্য শোনার পর মুসুল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে তিনি ওয়াজ মাহফিল ত্যাগ করেন। ইউপি চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, আব্দুর রউফ মিয়া ছিলেণ ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। ২০১৭ সালে বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে মনোয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। পরে তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। তিনি বিএনপির জালাও পোড়ায় মামলার আসামী। সর্বশেষ ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি সরকার বিরোধী নানা বক্তব্য দিয়ে তিনি বিতর্কিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলাও হয়েছে। তারপরও তার অপকর্ম থেকে থাকেনি।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়ার সঙ্গে মোবাইলে একতাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকেই তিনি ফোন বন্ধ করে পলাতক রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউপ যে বক্তব্য দিয়েছেন এটি খুবই নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম বলেন, সরকার যাচ্ছেন সুষ্ঠু শান্তিপুর্ন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। প্রশাসনও সে দিক লক্ষ করে সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। একজন ইউপি চেয়ারম্যান কখনো ভোটারদের হুমকি ও ভয়ভিতি দেখাতে পারেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকার লোকজনের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের বক্তব্য শুনেছি। এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. কায়ছারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু শান্তিপুর্ন ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করাই আমাদের মুল লক্ষ ও উদ্দেশ্য। একজন জনপ্রতিনিধি ভোটারদের ভয়ভিতি ও হুমকি দিতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৩ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আজ বুধবার নানা আয়োজনে ১৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর। দীর্ঘ ৮ মাস ১০ দিন যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট পাকহানাদারদের আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মির্জাপুরের আকাশে বাতাসে হেমন্তের দ্বিপ্রহরে উড্ডীয়ন হয় সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্য খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এ উপলক্ষে আজ বুধবার উপজেলা প্রশাসন সকালে উপজেলা পরিষদ চত্তরে বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত অর্জন-৭১ এ পুষ্প স্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অপিসার শাকিলা বিনতে মতিন, এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান, পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুল, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা, সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মোশারফ হোসেন মনি, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক দুর্লভ বিশ^াস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদসহ স্থানীয় সাংবাদিক, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অপর দিকে সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে মুক্তির মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে শহীদদের স্মরণে প্রদীপ প্রজলন করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক জানান, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক আহবানে সারা দিয়ে টাঙ্গাইলে গঠিত হয় সংগ্রাম পরিষদ এবং হাইকমান্ড। এর নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত একাব্বর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আজাদ কামাল এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম। ২৬ মার্চের ওয়ারলেসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা। ৩রা এপ্রিল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়ান সাটিয়াচড়ায় পাকসেনারা আসামাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যরা নর ঘাতকদের উপর গুলি চালায়। দীর্ঘ সম্মুখ যুদ্ধে ১০৭ জন মুক্তিপাগল বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয় এবং ইপিআর নিহত হয় ২৩ জন। ৩৫০ জন পাকবাহিনী হতাহতের পর গোড়ান সাটিয়াচড়া মুক্ত হলেও পাকসেনার ঘাটি করে বসে উপজেলা সদর, পাথরঘাটা, বাঁশতৈল, নয়াপাড়া, ভড়রা ও নরদানা গ্রামে। পাকসেনারা আশেপাশের গ্রামে লূটপাট আর অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ ২৮ জন বাঙ্গালীকে হত্যা করে। ৭ মে দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা, তার একমাত্র পুত্র ভবানী প্রসাদ সাহা এবং ৮ মে থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হোসেনের বৃদ্ধ পিতা জয়নাল সরকারকে পুড়িয়ে হত্যা, মাজম আলী, মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের রাখাল চন্দ্র সাহা, সুদাম চন্দ্র সাহা, নিতাই মেম্বার, পান্না লাল, জগবন্ধু রায় সহ ৩৮ জনকে হানাদার এবং এদেশীয় দোসররা হত্যা করে লাশ লৌহজং নদীতে নিক্ষেপ করে। সে দিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি মনে করে মির্জাপুরবাসি আজও কাঁদে। মির্জাপুরকে হানাদার মুক্ত করার জন্য ১৮ নভেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। ১২ ডিসেম্বর রাতে দেশমাতৃকার সূর্য-সন্তান বীর যোদ্ধারা মির্জাপুরের বংশাই, লৌহজং ও চতুর্দিকে পাকসেনাদের ঘিরে ফেলে। শুরু হয় তুমুল সম্মুখ যুদ্ধ। আজাদ কামাল বীর প্রতীক, এম এ সবুর বীর প্রতীক ও রবিউল কমান্ডারের নেতৃত্বে ১৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর। প্রায় ৫শত মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকসেনাদের পরাজিত করে এবং পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেয় সবুজ জমিনের উপর লাল সবুজ খচিত স্বাধীন বাংলার পতাকা। এমনিভাবে বহু রক্ত, ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং সম্মুখ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৮ মাস ১০ দিন পর বংশাই, লৌহজং ও ধলেশ্বরী বিধৌত আজ থেকে ৫২ বছর পূর্বে এইদিনে সম্পূর্নভাবে হানাদার মুক্ত হয়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষে উপজেলা প্রশসের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন চত্তরে বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত অর্জন-৭১ এ পুষ্পস্তবক অর্পন, সন্ধায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে নির্মিত মুক্তির মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জলন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
১৩ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হানাদার মুক্ত দিবস
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল,
১৩ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর উপজেলা। দীর্ঘ ৮ মাস ১০ দিন যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট পাকহানাদারদের আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মির্জাপুরের আকাশে বাতাসে হেমন্তের দ্বিপ্রহরে উড্ডীয়ন হয় সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্য খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এই পতাকা এমনি আসেনি। এর জন্য মির্জাপুর বাসিকে দিতে হয়েছে অনেক রক্ত এবং পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে অনেক সম্মুখ যুদ্ধে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক জানান, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক আহবানে সারা দিয়ে টাঙ্গাইলে গঠিত হয় সংগ্রাম পরিষদ এবং হাইকমান্ড। এর নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত একাব্বর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আজাদ কামাল এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম। ২৬ মার্চের ওয়ারলেসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা। ৩রা এপ্রিল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়ান সাটিয়াচড়ায় পাকসেনারা আসামাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যরা নর ঘাতকদের উপর গুলি চালায়। দীর্ঘ সম্মুখ যুদ্ধে ১০৭ জন মুক্তিপাগল বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয় এবং ইপিআর নিহত হয় ২৩ জন। ৩৫০ জন পাকবাহিনী হতাহতের পর গোড়ান সাটিয়াচড়া মুক্ত হলেও পাকসেনার ঘাটি করে বসে উপজেলা সদর, পাথরঘাটা, বাঁশতৈল, নয়াপাড়া, ভড়রা ও নরদানা গ্রামে। পাকসেনারা আশেপাশের গ্রামে লূটপাট আর অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ ২৮ জন বাঙ্গালীকে হত্যা করে। ৭ মে দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা, তার একমাত্র পুত্র ভবানী প্রসাদ সাহা এবং ৮ মে থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হোসেনের বৃদ্ধ পিতা জয়নাল সরকারকে পুড়িয়ে হত্যা, মাজম আলী, মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের রাখাল চন্দ্র সাহা, সুদাম চন্দ্র সাহা, নিতাই মেম্বার, পান্না লাল, জগবন্ধু রায় সহ ৩৮ জনকে হানাদার এবং এদেশীয় দোসররা হত্যা করে লাশ লৌহজং নদীতে নিক্ষেপ করে। সে দিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি মনে করে মির্জাপুরবাসি আজও কাঁদে। মির্জাপুরকে হানাদার মুক্ত করার জন্য ১৮ নভেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। ১২ ডিসেম্বর রাতে দেশমাতৃকার সূর্য-সন্তান বীর যোদ্ধারা মির্জাপুরের বংশাই, লৌহজং ও চতুর্দিকে পাকসেনাদের ঘিরে ফেলে। শুরু হয় তুমুল সম্মুখ যুদ্ধ। আজাদ কামাল বীর প্রতীক, এম এ সবুর বীর প্রতীক ও রবিউল কমান্ডারের নেতৃত্বে ১৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর। প্রায় ৫শত মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকসেনাদের পরাজিত করে এবং পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেয় সবুজ জমিনের উপর লাল সবুজ খচিত স্বাধীন বাংলার পতাকা। এমনিভাবে বহু রক্ত, ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং সম্মুখ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৮ মাস ১০ দিন পর বংশাই, লৌহজং ও ধলেশ্বরী বিধৌত আজ থেকে ৫২ বছর পূর্বে এইদিনে সম্পূর্নভাবে হানাদার মুক্ত হয়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় মির্জাপুর। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষে উপজেলা প্রশসের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন চত্তরে বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত অর্জন-৭১ এ পুষ্পস্তবক অর্পন, সন্ধায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে নির্মিত মুক্তির মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জলন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
মির্জাপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত
মীর আনোয়ারর হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি উপজেলা পরিষদ চত্তরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানব বন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। মানব বন্ধন শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেল উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন। উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. মফিজুর রহমান স্বপনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মাসুদুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অপিসার মো. নজরুল ইসলাম এবং উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।