বাংলা নিউজ
Monday, March 17, 2025
Home Blog Page 72

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোয়ন ক্রয় করলেন ফজলুর রহমান ফারুক

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
আগামী ১৭ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়নপত্র ক্রয় করেছেন বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ একুশে পদকপ্রাপ্ত সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ফজলুর রহমান খান ফারুক। আজ রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডীর ৩/এ আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় থেকে তার পক্ষে দলীয় মনোয়নপত্র ক্রয় করেন তার পুত্র টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাট্রিজের সভাপতি ও এফবিসিসিআইসির পরিচালক খান আহমেদ শুভ এমপি। এ সময় মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, খান আহমেদ শুভর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মীর আসিফ অনিক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান সাদেকসহ জেলা নেতৃবৃন্দ।
আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ফজলুর রহমান খান ফারুকের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কহেলা গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। একাধারে তিনি কবি, সাহিত্যিক, গল্পকার, সমাজ সেবক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা গুনে গুনান্মিত। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পরেন। ৫২ ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট, ৬৯ এর গণঅভ্যুথান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি টাঙ্গাইলের আওয়ামীলীগকে অত্যান্ত সু-সংগঠিত করে রাখেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যান্ত দক্ষ ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন একুশে পদক। আগামী ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদ ও টাঙ্গাইলের অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বলে আওয়ামীলীগের দলীয় সুত্র জানেিয়ছেন।

মির্জাপুরে সালমানের আত্নহত্যা প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবীতে মানব বন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গ্রাম্য শালিসে মাতাব্বরদের হাতে নির্যাতনের শিকার ডিএম সালমান (১৬) নামে এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষপানে আত্নহত্যা করেছে। উপজেলার জামুর্কি ইউনিয়নের চুকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সালমান বানাইল ইউনিয়নের জনতা গল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সালমানের পিতার পিতার মো. শাসসুল আলম দেওয়ান। গ্রামের বাড়ি আজগানা ইউনিয়নের কুড়াতলী গ্রামে। মাকে নিয়ে সে চুকুরিয়া গ্রামে নানার বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতো।
এদিকে আজ রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ডিএম সালমান আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সালমানের নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের গল্লি জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে বিদ্যালয় চত্বর ও পাকুল্যা-লাউহাটি সড়কে তারা এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। বিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী সকাল থেকেই বিদ্যালয় চত্বরে সমবেত হতে থাকে। পরে ডিএম সালমান আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি পাকুল্যা-লাউহাটি সড়কের গল্লি বাজার প্রদক্ষীণ করে বিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে ব্ক্তব্য রাখেন, সালমানের মামাতো ভাই জামুর্কী ইউনিয়ন আ.লীগের সাংগঠিনিক সম্পাদক উজ্জল হোসেন খান, সালমানের সহপাটী রবিন, সজিব ও শৈশব। বক্তারা বলেন, সালমানের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীরা এলাকার কথিত মাতাব্বর। একটি তুচচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা সালমানকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই প্ররোচনাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
সালমানের সহাপাঠি ও চুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জল হোসেনসহ একাধিক ব্যাক্তি জানায়, সালমান এবং তার বন্ধু আলামিন চুকুরিয়া গ্রামের শফিকুলের দোকানে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতো। গত কয়েক দিন পুর্বে দোকানদার শফিকুলকে টাকা না দিয়ে সালমানের বন্ধু আলামিন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। দোকানদার শফিকুল টাকার জন্য সালমানকে চাপ দেয় এবং গ্রামের মাতাব্বরদের কাছে বিচার দাবী জানায়। এ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট চুকুরিয়া গ্রামের সেকান্দার মিয়ার বাড়িতে গ্রাম্য শালিসের আয়োজন করা হয। শালিসে সালমানকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং টাকার জন্য একটি ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়। শালিসে সেকান্দার, আব্দুল লতিফ ও সাইফুলসহ ১৫-২০ জন মাতাব্বর ছিল।
অপর দিকে ঘরে আটক থাকা অবস্থায় সালমান এই ঘটনা চুকুরিয়া গ্রামের মামুন নামে এক যুবককে মোবাইল জানায়। মামুন এসে তাকে উদ্ধার করে। নির্যাতনের শিকার সালমান পরের দিন বিষপানে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জামুর্কি সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাত তিনটার দিকে সালমান মারা যায়। ঘটনার পর থেকেই গ্রাম্য ঐ মাতাব্বরগন গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে। সালমানের সহপাঠি, শিক্ষক, পরিবার এবং একাবাসি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার এসআই মো. আবু সাইদ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় খুন হওয়া শান্তার লাশ দেশে, ময়না তদন্ত সম্পন্ন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবার

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
দক্ষিন আফ্রিকায় প্রেমিক স্বামীর হাতে খুন হওয়া শান্তার লাশ আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দেশে এসেছে। শান্তার পরিবার লাশ নিয়ে মির্জাপুর থানায় আসেন। সেখানে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান মিয়া।
জানা গেছে, প্রেম করে বিয়ে করার এক বছরের মাথায় দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রেমিকার হাতেই শান্তা ইসলাম (২৩) নির্মম ভাবে খুনের শিকার হয়েছে। শান্তা খুন হওয়ার দুই দিন পর দক্ষিন আফ্রিকা পুলিশ ঘাতক সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। খুনের শিকার শান্তা ইসলামের পরিবার অভিযোগ করেছে তার স্বামী সুমন মিয়া (৪০) মোটা অংকের টাকা না পেয়ে গত (২৮ আগস্ট) শান্তাকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মম ভাবে খুন করেছে। শান্তার খুনের খবর দেশে তার গ্রামের বাড়িতে আসলে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাবা-মা শোকে পাথর হয়ে গেছে। শান্তার পিতার নাম আব্দুস সালাম সিকদার। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামে। আগামীকাল শনিবার দেশে আসছে শান্তার লাশ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ মিয়া জানান, ঘাতক সুমন মিয়া প্রায় প্রায় এক যুগ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার লাইটেন বার্গ শহরে ব্যবসা করতে যান। সুমন ও শান্তার পরিবারের সঙ্গে আত্বীয়তার সুত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত এক বছর পুর্বে বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়ার সঙ্গে মির্জাপুর উপজেলার থলপাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম সিকদারের মেয়ে শান্তার মোবাইলে বিয়ে হয়। গত ৫-৬ মাস পুর্বে শান্তাকে সুমন দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে যায়। শান্তার পিতা আব্দুস সালাম অভিযোগ করেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা বাড়ানোর জন্য শান্তার স্বামী সুমন মিয়া মোটা অংকের টাকা দাবী করে। ধার দেনা করে সাত লাখ টাকাও নেন।
এদিকে গত ২৭ আগস্ট শান্তার স্বামী সুমন ২/৩ দিনের মধ্যে শান্তার বাবাকে আরও দশ লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। টাকা না পাঠালে শান্তার অবস্থা খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়। ২৮ আগস্ট রাতে ঘাতক সুমন শান্তাকে পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং ধারালো অস্্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ঘটনাটি স্থানীয় পুলিশকে ঘটনাটি জানালে পুলিশ বাসা থেকে শান্তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকেই ঘাতক সুমন পলাতক বলে জানা গেছে। শান্তার পরিবার ও এরাকাবাসি ঘাতক সুমনকে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে শান্তার পিতা আব্দুস সালাম ও তিন নম্বর ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, মোটা অংকের টাকা না পেয়েই ঘাতক সুমন মিয়া শান্তাকে নির্মম ভাবে খুন করেছে। শান্তা খুনের দুই দিন পর দক্ষিন আফ্রিকা পুলিশ ঘাতক সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। আজ শনিবার শান্তার লাশ দেশে আনা হয়েছে। শান্তার পিতা বাদী হয়ে সুমনকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। শান্তার পরিবার ও এলাকাবাসি ঘাতক সুমন মিয়ার ফাঁসির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান মিয়া বলেন, দক্ষিন আফ্রিকা থেকে লাশ আসার পর সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। পরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর মামলা হবে।

মির্জাপুরে মহেড়া ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটির সভাপতি অজিত সম্পাদক দিলীপ

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নং মহেড়া ইউনিয়নের বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ছাওয়ালী কালি মন্দির প্রাঙ্গনে এ উপলক্ষে কাউন্সিল অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক।
গোপাল সাহার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব সাবেক জিএস বিপ্লব কুমার সাহা, সদস্য স্বপন মন্ডল, সুবির দত্ত ও দিলীপ বণিক প্রমুখ। পরে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে বাবু অজিত কুমার বণিককে সভাপতি এবং দিলীপ কুমার বণিককে সাধারন সম্পাদক করে এক নং মহেড়া ইউনিয়ন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুনাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য সভাপতি-সম্পাদককে উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ নির্দেশ প্রদান করেছেন।

মির্জাপুরে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের তীব্র সংকটে লোকসানে দিশেহারা কারখানা কতৃপক্ষ

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গোড়াই শিল্পাঞ্চলে গত ২০-২৫ দিনের ব্যবধানে তীব্র গ্যাসের সংকটে কারখানায় উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় মিলকারখানায় প্রতি দিন কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে লোডশেডিং। গ্যাস সংকট ও লোডশেডিংয়ে দিশেহারা কারখানা কতৃপক্ষ। কবে নাগাদ গ্যাস সংকট সমাধান হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। ফলে বিপুল অংকের ক্ষতির আশংকায় হতাশায় ভুগছে মালিকরা। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোং লি. এর অফিসে বিষয়টি জানানো হলেও তারা গ্যাস সমস্যার সমাধারন দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তীব্র গ্যাস সংকট থাকায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে বিদেশী বায়ারদের অর্ডার বাতিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পকারখানার কর্মকর্তাগন। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোং লি. এর কর্মকর্তাগন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, গ্যাস লাইনের কমপ্্েরসারের মুল পাইপে গ্যাসের চাপ না থাকায় ও বিভিন্ন স্থানে রক্ষনাবেক্ষনের কাজ হওয়ায় গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) গোড়াই শিল্পাঞ্চলের একাধিক শিল্প কারখানার কর্মকর্তা-মালিক ও শ্রমিক সুত্র জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই শিল্পাঞ্চলে ছোট বড় মিলে শতাধিক মিলকারখানা রয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টস, নিটিং এন্ড ডাইয়িং, সুতা উৎপাদন কারখানা, টায়ার এন্ড টিউব, সিরামিকস ও গ্লাস ফ্যাক্টরী ইত্যাদি। এসব কারখানায় উৎপাদন মুলত গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। টাঙ্গাইলে র প্রায় ৮০ হেক্টো মিলিয়ন গ্যাসের প্রয়োজন। বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০-৪০ হোক্টো মিলিয়ন। তাও আবার কোন দিকোন দিন পাওয় াযাচ্ছে না। উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কম্পিট কম্পোজিট নীট লি., কম্পিট কম্পোজিট স্পিনিং মিলস, কম্পিট কম্পোজিট গার্মেন্ট, নাহিদ কটন মিলস লি. ডেলসি কটন স্পিনিং মিলস লি. উত্তরা স্পিনিং মিলস লি. টেকনো স্পিনিং মিলস লি. নিউটেক্্র নীট কম্পোজিট লি. সাউথ ইস্ট টেক্্রটাইলস স্পিনিং মিলস লি. সাউথ ইস্ট গার্মেন্টস লি, ইয়ুৎ স্পিনিং মিলস লি. বেঙ্গল এনএফকে লি, খান গার্মেন্টস লি. মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাসটিজ লি. মন্ডল গ্রুপ অব লি. নাসির গ্রুপ অব ইন্ডসটিজ লি. শিরীন স্পিনিং মিলস, নিউটোন গ্রুপ অব লি. বাডর্স গ্রুপ অব লি. উল্লেখ্যযোগ্য। এসব শিল্পকারখানায় প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক চাকুরী করে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। দীর্ঘ দিন ধরে এসব শিল্পকারখানায় গ্যাসের চাপ না থাকায় উৎপাদন শুন্যের কোঠায় নেমে মিল বন্ধ হয়ে শ্রমিকদের চাকুরী হারাতে হচ্ছে। এছাড়া মালিক পক্ষও শতশত কোটি টাকার লোকসানে বলে কারখানার মালিক-কর্মকর্তা এবং শ্রমিকগন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কম্পিফিট কম্পোজিট নীট লি. এর সিইওি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু কাউসার এবং জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গোড়াই শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের তীব্র সংকট থাকায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে প্রতি মাসে তাদের শতশত কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রতি দিন গড়ে ১২-১৫ ঘন্টাই গ্যাসের অভাবে মেশিনের চাকা ঘুরছে না। উদৎপাদন বন্ধ থাকলেও শ্রমিকদের বেতন ভাতা দিতে হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে গ্যাসের তীব্র সংকট থাকায় এই কারখানায় কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ করার পরও তারা বিষয়টির দিকে কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ফলে কারখানার মালিকপক্ষ শতশত কোটি টাকার ব্যাংক ঋনে জর্জরিত হয়ে পরেছে। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার কারখানাসহ গোড়াই শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মচারীর চাকুরী হারিয়ে বেকার হবার পথে বসেছে। একই অভিযোগ করেছেন, উত্তরা স্পিনিং মিলস, টেকনো স্পিনিং মিলস, কম্পিট কম্পোজিট, সাইথ ইস্ট টেক্্রটাইল ও নিউটেক্্র গ্রুপ অব ইন্ডাসটিজের কর্মকর্তা মালিকদের। গার্মেন্টর্স ও শিল্পাখাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শিল্প মালিকদের সংগঠন গোড়াই-কালিয়াকৈর-কোনাবাড়ি ইন্ডাসটিয়াল ফোরামের সভাপতি বিধান রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই, কালিয়াকৈর ও কোনাবাড়ি এলাকায় কয়েক শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন ধরে মুল লাইনে গ্যাসের চাপ নেই। দিন রাত মিলে ২-৩ ঘন্টাও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে যোগ হয়েছে তীব্র লোডশেডিং। উৎপাদন না হওয়ায় তাদের শতশত কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে বিদেশী বায়ারদের অর্ডার বাতিল হচ্ছে। সেই সঙ্গে কারখানায় কর্মরত প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর চাকুরী চলে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিষয়টির দিকে সরকারের উচ্চ পর্যায় এবং তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিউিশন কো. লি. টাঙ্গাইল জোনাল অফিসের ম্যানেজার মো. খোরশেদ আলম বলেন, গ্যাস সরবরাহ করেন জিডিসিএল। তারা গ্যাসের রেশনিং সিষ্টেম চালু করেছেন। কমপ্রেসারের মুল লাইনে গ্যাসের চাপ না থাকায় শিল্পে নয় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গ্যাসের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রয়োজন মাফিক তারা গ্যাস পাচ্ছেন না। গোড়াই শিল্পের মালিকদের পক্ষ থেকে গ্যাস না থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাতের আধাঁরে বিতর্কিতদের নিয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি গঠন ও বাতিলের দাবী শীর্ষক দৈনিক নিউজ ডটনেট নিউজ পোর্টোলে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তার লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক এবং সদস্য সচিব বিপ্লব কুমার সাহা। লিখিত প্রতিবাদ লিপিতে তারা উল্লেখ করেন, টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় টাঙ্গাইল জেলাা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে ও সাধারন সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুন স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি গত ২২/০৮/২০২২ ইং তারিখ হতে আগামী তিন মাসের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নির্দেশ অমান্য করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমুল্যায়ন করে এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিতর্কিতদের নামের তালিকা দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। কোন প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় জেলা নেতৃবৃন্দ রাতের আধাঁরে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়ে চিঠি দেননি। আহবায়ক কমিটিতে ছয় জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও বর্তমান প্যানেল মেয়রসহ পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের ২৫ জনকে সদস্য রাখা হয়েছে। আহবায়ক কমিটিতে কেউ বিতর্কিত নেই এবং কারও বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগও নেই। এই আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হচ্ছে কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়নি। একটি চক্র মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে সংবাদ প্রচার করিয়েছে যার কোন ভিত্তি নেই। আমরা উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

মির্জাপুরে সরকারী নির্ধারিত মুল্যে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রয়ের উদ্ধোধন

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত সরকারী নির্ধারিত মুল্যে ওএমএসের চাল ৩০ টাকা ও আট ১৮ টাকা মুল্যে বিক্রয়ের উদ্ধোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এ কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন। এ সময় মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান, ব্যবসাীয় সমিতির সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ ও খাদ্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জাপুরে বিতর্কিতদের নিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবী

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাতের আধাঁরে বিতর্কিতদের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবী জানিয়েছেন পূজারি ও ভক্তবৃন্দ। আহবায়ক কমিটি বাতিল ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে এলাকায় ও সমাজে গ্রহনযোগ্য এবং ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবী জানিয়েছেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ টাঙ্গাইল জেলা নেতৃবৃন্দ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন আহবায়ক কমিটি বাতিল করে ২/১ দিনের মধ্যে যোগ্যদের ও এলাকায় গ্রহনযোগ্যদের মুল্যায়ন করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক এবং সাধারন সম্পাদক বাবু প্রমথেস গোষ্মামী সংকর। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১৫ জুলাই টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য। ঐ সভায় পূজা উদয়াপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ভি এন চ্যাটার্জি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এড. কিশোর রঞ্জন, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর কুমার পাল, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে ও সাধারন সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুনসহ নেতৃবৃন্দ। গত ২ আগস্ট জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্রে আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলক এবং সাধারন সম্পাদক প্রমথেস গোষ্মামী সংকরকে নির্দেশনা দেন।
এদিকে জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নির্দেশ অমান্য করে একটি চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের গ্রহন যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের না জানিয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কয়েকজন বিতর্কিতদের নামের তালিকা দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব জমা দেন। একটি প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় জেলা নেতৃবৃন্দ রাতের আধাঁরে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে ২২ আগস্ট ঐ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়ে চিঠি দেন। কমিটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার হিতেশ চন্দ্র পুলককে আহবায়ক এবং বাবু স্বপন কুমার মন্ডল, বিপ্লব কুমার সাহা, যতীন্দ্র নাথ, পিষুষ কান্তি সাহা নন্দ, তাপস সাহাসহ ২৫ জনকে সদস্য করেছেন। আহবায়ক কমিটিতে যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে দুই একজন বাদে অধিকাংশ বিতর্কিত এবং এদের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে বিক্ষুব্দরা জানান। ঐ আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের পূজারি ও ভক্তদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি-সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা এই আহবায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সঠিক তথ্য না দিয়ে একটি পক্ষ মির্জাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি নিয়েছে। ফলে আহবায়ক কমিটি নিয়ে এলাকায় নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐ আহবায়ক কমিটি বাতিল করে ২/১ দিনের মধ্যে নতুন ভাবে মির্জাপুর উপজেলায় পূজা উদযান পরিষদের কমিটি দেওয়া হবে।

মির্জাপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, পুত্রের লাঠির আঘাতে পিতা নিহত

0

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে পুত্রের লাঠির আঘাতে পিতা আনোয়ার ওরফে দুখাই (৫০) নিহত হয়েছে। ঘাতক পুত্র লিটন মিয়া (৩০) পালিয়ে গেলেও পুলিশ লিটনের স্ত্রী রাশেদা বেগম (২৫) আটক করেছে। আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কি ইউনিয়নের আগধল্যা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, আজ বুধবার দুপুরে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে লিটন ও তার স্ত্রী রাশেদার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এ সময় লিটনের পিতা আনোয়ার দুখাই এগিয়ে গেলে লিটন ক্ষিপ্ত হয়ে তার পিতাকে লাঠি দিয়ে আঘাত ও কিলঘুষি দেয়। লাঠির আঘাত ও কিলঘূষিতে আনোয়ার দুখাই অসুস্থ্য হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনার পর পরই ঘাতক লিটন পালিয়ে যায়। এলাকাবাসি পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে লিটনের স্ত্রী রাশেদা আটক করে এবং আনোয়ার দুখাইয়ের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
মির্জাপুর থানার (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম, সেকেন্ড অফিসার মো. মোশরাফ হোসেন ও তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিটনের স্ত্রী রাশেদা বেগমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার মুলহোতা লিটনকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন।

মির্জাপুরে সিফাত হত্যায়, দুই ঘাতক গ্রেফতার অপমানের প্রতিশোধ নিতেই এ হত্যাকান্ড

0

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলর মির্জাপুরে সপ্তম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্র সিফাত হোসেন চাঞ্চল্যকর হত্যার ৬ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ ক্লুলেন্সের মাধ্যমে মুল রহস্য উৎঘাটন করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঘাতক মেহেতাব মিয়া (১৮) এবং আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে দেশীয় অস্্রসহ পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘাতকদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে সিফাতের এনড্রয়েড মোবাইল ফোন। গ্রাম্য শালিসে জুতা পেটা এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা- এই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই ঘাতকরা দল বেঁধে সিফাতকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের পর নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিফাত হত্যার বিস্তারিত গরমাধ্যমকর্মীদের কাছে তুলে ধরেন। এ সময় ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার মো. মোশরাফ হোসেন, ডিএসবির এসআই মো. রেজাউল ইসলাম, এসআই সাইফুল ইসলাম, আবুল বাশার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সাইদসহ পুলিশেরে অন্যান্য কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) মো. সরফুদ্দিন এবং সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেল) এ এস এম মনসুর মুসার দিক নির্দেশনায় চাঞ্চল্যকর সিফাত হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন এবং ঘাতকদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, সিফাতের পিতার নাম মো. শহিদুর রহমান। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামে। সিফাত মির্জাপুর উপজেলা সদরের আফাজ উদ্দিন দারুল উফুম সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। গত সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে ফুসকা খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে সিফাত মির্জাপুর বাইপাস রেল স্টেশনের পাশে আসে। রাত এগারটার দিকে রেললাইনের ব্রিজের পাশে সিফাতের লাশ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ঘাতকরা পুলিশকে জানিয়েছে, গত ১৮ আগস্ট সিফাত বংশাই নদীতে গোসল করতে গিয়ে বখাটে হিরনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় বখাটে হিরন ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে সিফাতকে বেদম প্রহার করলে তার একটি হাত ভেঙ্গে দিলে সে অসুস্থ্য হয়ে পরে। পরে তাকে মির্জাপুর সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় গ্রাম্য শালিসে বখাটে হিরনকে স্থানীয় মাতাব্বরগন শাসন করে জুতাপেটা করে। শালিসে জুতাপেটার অপমানের প্রতিশোধ এবং পুর্ব শত্রুতার ক্ষোভে বখাটে হিরন ও তার সহযোগিরা সিফাতকে ধরে নিয়ে পায়ু পথে বাতাস ও লাঠি ঢুকিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর নির্মম ভাবে হত্যা করে লাশ মির্জাপুর রেল লাইনের পাশে ধনিচা ক্ষেতে ফেলে গুম করে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুলিশ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় সিফাতের লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে নিহত সিফাতের বাবা শহিদুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২০, ধারা ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘাতক মেহেতাব মিয়া ও আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে গ্রেফতার করেছে। মুল ঘাতক হিরন ও তার সহযোগিদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) মো. আবু সাইদ বলেন, গ্রেফতারকৃত দুই আসামী মেহেতাব মিয়া ও আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শামসুল আলমের আমলী আদালতে হাজির করা হলে মেহেতাব মিয়া স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্ধি দিয়েছে। এছাড়া চাঞ্চল্যকর এই হত্যার সঙ্গে আরও পাঁচজন জড়িত বলে সে বিচারককে জানায়। পরে বিচারক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর আসামী আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী রবিবার শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। সিফাত হত্যা ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে সিফাত হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে ফুসে উঠেছে। তার পরিবার, এলাকাবাসি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তার শিক্ষক ও সহপাঠিরা ঘাতকদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, মাদ্রাসা ছাত্র সিফাত হত্যার মুল রহস্য উৎঘাটন হয়েছে। দুইজনকে গ্রেফতারের পর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগন।